সারাদেশে গত এক মাসে ৪৮৭ সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৩৮ জনের প্রাণহানির তথ্য উঠে এসেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে; নিহতদের মধ্যে ৩০ শতাংশের প্রাণ গেছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়।
এই সময়ে রেলপথে ৫৩ দুর্ঘটনায় ৪৭ জন, নৌপথে নয়টি দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত হয়েছে বলে গতকাল বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। খবর বিডিনিউজের। জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে সমিতি বলছে, মার্চ মাসে সড়ক, রেল ও নৌ–পথ মিলিয়ে মোট ৫৪৯ দুর্ঘটনায় ৫৯২ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ১ হাজার ১৬৭ জন। এর মধ্যে কেবল মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা হয়েছে ১৫২টি; আর এসব ঘটনায় ১৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনায় যেসব যানবাহনের পরিচয় মিলেছে তার মধ্যে ১৬ দশমিক ৮১ শতাংশ বাস, ২৮ দশমিক ২৩ শতাংশ ট্রাক–পিকাপ–কাভার্ডভ্যান ও লরি, ২৩ দশমিক ১২ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৪ দশমিক ১১ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ নছিমন–করিমন–মাহিন্দ্রা–ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ কার–জিপ–মাইক্রোবাস, ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মোট দুর্ঘটনার ৫৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ১৫ দশমিক ১৯ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৬ দশমিক ৪২ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ নানা কারণে এবং এক দশমিক ২৩ শতাংশ ট্রেন–যানবাহন সংঘর্ষে হয়েছে।
এছাড়া মোট দুর্ঘটনার ৩৩ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৩ দশমিক ২০ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩৫ দশমিক ১১ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এরমধ্যে ৬ দশমিক ১৬ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১ দশমিক ২৩ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ১ দশমিক ২৩ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে ঘটেছে। দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ১৭৯ জন চালক, ১০১ জন পথচারী, ৬০ জন পরিবহন শ্রমিক, ১২২ জন শিক্ষার্থী, ১৩ জন শিক্ষক, ১২ জন আইন–শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৯০ জন নারী, ৫০ জন শিশু, দুইজন সাংবাদিক, সাতজন মুক্তিযোদ্ধা, দুইজন আইনজীবী ও একজন প্রকৌশলী এবং পাঁচজন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে সড়ক দুর্ঘটনার কিছু কারণ উল্লেখ করা হয়েছে– চালকের অদক্ষতা ও বেপরোয়া মনোভাব; বেপরোয়া গতি ও বিপদজনক ওভারটেকিং; ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; ফিটনেসবিহীন যানবাহন; চালকের কর্মঘণ্টা ও বেতন সুনির্দিষ্টি না থাকা; ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত দখলে থাকা ও রাস্তার পাশে হাট–বাজার; যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা; ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ ও আইন না মানা।