চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার আলোচিত সিংহী নোভা মারা গেছে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মারা যায়। ২০০৫ সালের জুন মাসে জন্ম নেওয়া নোভা গত এক বছর ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিল। ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে খাওয়া–দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল।
নোভা স্বাভাবিক আয়ুষ্কাল পর্যন্ত বেঁচেছিল উল্লেখ করে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, নোভার মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। মাটিচাপা দেওয়ার আগে চামড়া সংরক্ষণ করা হবে। এরপর কঙ্কাল সংগ্রহ করা হবে। ভবিষ্যতে চিড়িয়াখানায় জাদুঘর হলে সেখানে নোভার চামড়া প্রদর্শন করা হবে। তিনি জানান, সিংহী নোভা প্রায় ১৮ বছর ৪ মাস বেঁচেছিল। এটি একটি সিংহীর স্বাভাবিক আয়ুষ্কাল। একটি সিংহ গড়ে ১৬ থেকে ১৭ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় সিংহ দম্পতি রাজ–লক্ষ্মীর ঘরে ২০০৫ সালের ১৬ জুন দুটি মেয়ে সিংহ বর্ষা ও নোভার জন্ম হয়। তাদের জন্মের কিছুদিন পর বাবা রাজ এবং ২০০৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি মা লক্ষ্মী মারা যায়। প্রায় ১১ বছর নিঃসঙ্গ নোভার জন্য পুরুষ সঙ্গী আনার উদ্যোগ নিলে ২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর প্রাণী বিনিময় প্রক্রিয়ায় রংপুর চিড়িয়াখানায় বর্ষাকে পাঠিয়ে সেখান থেকে আনা হয় ১৩ বছর বয়সী সিংহ বাদশাহকে। চট্টগ্রামে আনার পর বাদশার নাম রাখা হয় নভ।
২০১৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর সিংহ নভ ও সিংহী নোভাকে এক খাঁচায় দেওয়ার সময় বেশ আয়োজন করে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। সিংহ–সিংহীর বিয়ে উপলক্ষে ওই আয়োজন আলোচিত হয়েছিল। ওই সময় নোভার বয়স ছিল ১১ বছর, নভ’র ১৩ বছর। মানে সিংহ–সিংহী প্রজনন সময়ের শেষ দিকে এসে এক হয়েছিল। নভ’র স্বাভাবিক চাঞ্চল্য কমে যাওয়ার পাশাপাশি তার প্রজনন ক্ষমতাও লোপ পেয়েছিল। তাই নোভা ও নভ’র স্বাভাবিক প্রজনন হয়নি। নভ বেশ কিছুদিন আগে মারা যায়।
নভ ও নোভা বুড়ো হওয়ায় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ ইতোপূর্বে নতুন দুটি সিংহ–সিংহী আনার ব্যবস্থা করে। বর্তমানে চিড়িয়াখানায় দুই বছর বয়সী দুটি সিংহ ও সিংহী রয়েছে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বাঘ, সিংহ, কুমির, জলহস্তী, বানর, হরিণ, গয়াল, জেব্রা, বানর, উল্লুুক, ভালুক, শকুন, উঠপাখি, মেছোবাঘ, অজগর, টার্কিসহ ৬৯ প্রজাতির ৫২০টি পশু–পাখি রয়েছে।