মাঘ মাস শেষে শীতের সময়টা ধীরে ধীরে ঘনিয়ে আসছে এবং আর দু একদিন পরেই একেবারে বিদায় নিবে আমার প্রিয় ঋতুটি। ঋতু বদলের প্রাকৃতিক নিয়মেই শীতকালের অন্ত ঘটতে যাচ্ছে মহান স্বাধীনতার মাসে। আর এই শীতের কুয়াশাময় প্রত্যেকটি সন্ধ্যায় ছিল খেজুরের রসের মিষ্টি ঘ্রাণের তৃপ্তিময় স্বাদের সাথে মজাদার ভাপা পিঠা। আর এ ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্পর্শটা যখন মুখে উঠে, তখন মনে দাগ কেটে বসলো একজনকে ঘিরে। সে হলো আমার সবচেয়ে আপন, সবচেয়ে প্রিয়জন। বলতে দ্বিধা নেই, যার কথা ভাবছি তাকে যদি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ না করি আমার বোধহয় পাপ হবে।একটু ইঙ্গিত রেখে বলছি, মহান আল্লাহর গৌরবময় ক্ষমতায় একজন মহীয়সী নারীর গর্ভে ১০ মাস ১০দিন সুযত্নে বসবাস করার পর এ পৃথিবীর আলোর মুখ দেখার সৌভাগ্য অর্জন করি। আর জন্মের পরেও আমরা নিতান্তই অসহায়। সে মহান নারীর আদর যত্ন ছাড়া বেড়ে উঠতে পারি না। খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে প্রায় সমস্ত কাজ তিনিই সম্পন্ন করেন একেবারে নিঃস্বার্থভাবে। বলছিলাম এ ধরণীর মা নামক মহান রত্নটির কথা। হে মা এমনি এক রত্ন যিনি তাঁর সন্তানদের জন্য অকপটে সবকিছু বিলিয়ে দিতে সর্বদা প্রস্তুত থাকেন। তিনি নিজের খাওয়া দাওয়া, পোশাক পরিচ্ছেদ বা আরাম আয়েশের কথা না ভেবে তাঁর সন্তানদের কল্যাণের জন্য হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেন। যতদিন তাঁর দেহে এতটুকু শক্তি সঞ্চিত থাকে ততদিন নিজেকে সপে দেন তাঁর সন্তানের সুখের জন্য। যখন আমরা স্কুলে ভর্তি হবার উপযুক্ত হই, তখন মায়ের কর্মে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়। তিনি তাঁর সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে সকাল অবদি অক্লান্ত পরিশ্রম করে যান। তাঁর কোন সন্তান যদি হঠাৎ অসুস্থ হয়, তখন সবচেয়ে বেশি অস্থিরতা দেখা দেয় মা নামক বটবৃক্ষটির। সন্তানের সুস্থতা কামনায় তখন দেখা যায় মায়ের আর্তনাদ। মা আসলে এমনিই। মায়ের সঙ্গে কারো কোন তুলনা হয় না বললেই চলে। তিনি নিজের সুখ বিসর্জন দিয়ে নিজের সন্তানের সুখের কথা চিন্তা করাতেই মশগুল থাকে। মা সম্পর্কে তাঁর ইতিবাচক বিশেষণ বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। তাঁর নিজের ভালো খাবারটা মুখে উঠে না, রেখে দেয় তাঁর সেই আদরের সন্তানের জন্য। আর সব কষ্ট মা হাসিমুখেই বরণ করে নেন। কখনো এসব ত্যাগের জন্য মায়ের মুখের হাসি মলিন হতে দেখা যায় না। সন্তানের প্রতিটি সুখই যেন মায়ের সুখ। পৃথিবীর সকল মা বেঁচে থাকুক পরিপূর্ণ সুস্থতায় এবং হাসিখুশিতে। কারণ, প্রত্যেকটি মা হচ্ছেন সন্তানের ভরসার এক জীবন্ত স্তম্ভ।