মাদ্রাসা, এতিমখানা কিংবা রোহিঙ্গাদের জন্য বিদেশ থেকে পাঠানো দানের টাকা হেফাজত নেতারা কীভাবে ‘আত্মসাৎ করে নিজেদের বিলাসিতা ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে’ ব্যবহার করেছেন, সেসব তথ্য এখন মিলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেছেন, কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠনটির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মামুনুল হকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টেই গত এক বছরে ‘৬ কোটি টাকা’ লেনদেন হয়েছে বলে তারা জানতে পেরেছেন। খবর বিডিনিউজের। ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজতি তাণ্ডবের পর থেকে সমপ্রতিক বিভিন্ন নাশকতার মামলায় কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠনটির অন্তত ৫০ জন নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে মামুনুল হকসহ বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ঘিরে দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজতকর্মীদের নাশকতার ঘটনার পর। তাদের গ্রেপ্তারের পর তদন্তে বেশ ‘অগ্রগতি’ হয়েছে জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা মাহবুব আলম গতকাল রোববার সাংবাদিকদের বলেন, তদন্ত করতে গিয়ে দেখা গেছে, বিদেশ থেকে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য থেকে পাঠানো টাকা, যা পাঠানো হয়েছে মাদ্রাসা, এতিমখানা তৈরিতে এবং রোহিঙ্গাদের জন্য, কিন্তু হেফাজত নেতারা তা নিজস্ব ভোগ বিলাসে, বাড়ি-গাড়ি তৈরিতে এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করেছেন, সেসব প্রমাণ আমরা পেয়েছি। তিনি জানান, হেফাজতের অর্থ সম্পাদক মনির হোসেন কাশেমীকে গ্রেপ্তারের পর তদন্তে দেখা যায়, এ সংগঠনে যে অর্থায়ন আসে, তার একটি বড় অংশ আসে বিদেশ থেকে। মূলত রোহিঙ্গা, মাদ্রাসা, এতিমদের জন্য আসে। তাছাড়া কিছু টাকা আসে যা শুধু হেফাজতের দলীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য। তবে এই টাকাগুলো তাদের হিসেবে সঠিকভাবে রাখা হয় না। হিসেবে আমরা স্বচ্ছতা পাইনি। ক্ষেত্র বিশেষে দেখা যায়, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বা হেফাজতের নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে ওই টাকা ব্যবহার করা হচ্ছে।
যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, মামুনুল হকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে গত এক বছরে ৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, আরও বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট আমরা পেয়েছি। আমরা গভীরভাবে মামলাগুলো তদন্ত ও পর্যবেক্ষণ করছি। নারী উন্নয়ন নীতি ও শিক্ষা নীতির বিরোধিতা করে ২০১০ সালে গড়ে উঠেছিল কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। তবে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গণজাগরণ আন্দোলনের পাল্টায় আট বছর আগে রাজপথে নেমে সংগঠনটি বেশি পরিচিতি পায়।












