হত্যাচেষ্টা, চাঁদাবাজি ও লুটপাটসহ বেশ কয়েকটি ধারার মামলায় কঙবাজার জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আবু তৈয়কে কারাগারে প্রেরণ করেন চকরিয়া উপজেলা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক। অবশ্য বর্তমান জেলা পরিষদ নির্বাচনে একই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিষয়টি জেলা জজ আদালতের নজরে এনে জামিনের প্রার্থনা করলে শুনানি শেষে আবু তৈয়বের জামিন মঞ্জুর হয়।
এর আগে ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর থানায় রুজুকৃত মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আবু তৈয়ব। এ সময় শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন আদালত।
চাঁদাবাজি মামলার বাদীপক্ষের কৌসুলী অ্যাডভোকেট মো. আবু ছালেহ জানান, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আবু তৈয়ব এই মামলায় ইতোপূর্বে উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিনপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা ছিল ছয় সপ্তাহের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর জেলা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণের। কিন্তু সেই আদেশ না মানায় পরবর্তীতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় তৈয়বের বিরুদ্ধে। সেই পরোয়ানার পর গতকাল আদালতে আত্মসমর্পণের মাধ্যমে জামিন আবেদন করেন। চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের হাজিপাড়ার মো. খালেদ চৌধুরী বাদী হয়ে এই মামলাটি করেছিলেন।
আবু তৈয়বের কৌসুলী ও চকরিয়া আদালতের এপিপি এ এইচ এম শহীদুল্লাহ চৌধুরী উপরোক্ত তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে দৈনিক আজাদীকে বলেন, আবু তৈয়ব চলমান জেলা পরিষদ নির্বাচনে চকরিয়া ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। তাই সি-ডাব্লিউমূলে নিম্ন আদালতের আদেশের সার্টিফাইড কপি সংগ্রহের পর বিকেলে জেলা জজ আদালতে জামিন চাওয়া হয়। এ সময় আদালত তাকে জামিন দেন।
এদিকে আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় কঙবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ড (৬ নম্বর) চকরিয়া উপজেলা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন আবু তৈয়ব। কিন্তু তাঁর দাখিলকৃত হলফনামায় বিভিন্ন মামলা সংক্রান্ত তথ্য গোপন করায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কাছে তৈয়বের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আপিল করেন। শুনানি শেষে আবু তৈয়বের প্রার্থিতা বাতিল হয়। পরে আবু তৈয়ব উচ্চ আদালতে গেলে প্রার্থিতা ফিরে পান। এরপর প্রতিপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে গেলে ফের আবু তৈয়বের প্রার্থিতা স্থগিত হয় ৮ সপ্তাহের জন্য। অবশ্য সেই আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে তৈয়বের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
বর্তমানে জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে আবু তৈয়বের প্রার্থিতা বহাল-বাতিলের দোলাচলে থাকায় আদৌ প্রার্থীতা বহাল থাকবে কীনা এবং এরইমধ্যে একটি ফৌজদারি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় জেলে যাওয়া নিয়ে ভোটারদের (স্থানীয় জনপ্রতিনিধি) মাঝে বেশ কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে। এমনটিই জানালেন জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ।