মাধ্যমিকের শতভাগ বই পাওয়া নিয়ে শঙ্কা চট্টগ্রামে

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২৫ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৫:০৮ পূর্বাহ্ণ

আর ক’দিন পরই নতুন বছর। আরো একটি নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরু। নতুন বছর মানেই নতুন ক্লাস, আর নতুন বইয়ের উৎসব। নতুন বইয়ের ঘ্রাণে শিক্ষার্থীদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। উৎসব আমেজে নতুন বই হাতে পাওয়ার লোভে বছরের প্রথম দিনটির জন্য অপেক্ষায় সারাদেশের কয়েক কোটি শিক্ষার্থী। বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে এরইমাঝে প্রস্তুতি চলছে দেশজুড়ে। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে অনেক আগে থেকে চট্টগ্রামেও নতুন বই আসা শুরু হয়েছে। তবে নতুন বছরের আর মাত্র ৫ দিন বাকি থাকলেও মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রায় অর্ধেক বই এখনো পৌঁছেনি চট্টগ্রামে। গত বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চাহিদার ৫১ শতাংশ বই পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। হিসেবে চাহিদার ৪৯ শতাংশ (অর্ধেক) বই এখনো বাকি। এতে করে নতুন বছর শুরুর আগে মাধ্যমিক পর্যায়ের শতভাগ বই পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে চট্টগ্রামে। যদিও নতুন বছরের আগেই অধিকাংশ বই পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হায়দার হেনরী। জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা অফিসার আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রামে চাহিদার অনেক বই এখনো বাকি। তবে এ বিষয়ে আমি এনসিটিবি (জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড) সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেছি। ডিসেম্বরের মধ্যেই অধিকাংশ বই পৌঁছে যাবে বলে তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।
চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী- মহানগরসহ চট্টগ্রাম জেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এবার মোট বইয়ের চাহিদা ১ কোটি ১৯ লাখ ৫২ হাজার ৯০২টি। এর মাঝে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬০ লাখ ৮৪ হাজার ৭৩২টি বই পাওয়া গেছে। হিসেবে চাহিদার ৫০.৯০ শতাংশ বই পৌঁছেছে স্কুলগুলোতে। আরো অর্ধেক (৪৯ শতাংশ) বই এখনো বাকি। এর বাইরে মাদ্রাসার ২৫ লাখ ৭৬ হাজার ৫৮১টি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৪ লাখ ২১ হাজার ২৯২টি বই পাওয়া গেছে। হিসেবে চাহিদার ৫৫ শতাংশ বই পৌঁছেছে মাদ্রাসাগুলোতে। আরো ৪৫ শতাংশ বই এখনো আসেনি। বিশেষ করে মাদ্রাসার এবতেদায়ী শ্রেণির বই খুব কম এসেছে বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।
এদিকে, সবমিলিয়ে (মাদ্রাসাসহ) মাধ্যমিক পর্যায়ে চট্টগ্রামে মোট বইয়ের চাহিদা দাঁড়ায় ১ কোটি ৪৫ লাখ ২৯ হাজার ৪৮৩টি। এর মাঝে এখন পর্যন্ত ৭৫ লাখ ৬ হাজার ২৪টি বই পাওয়া গেছে। হিসেবে মোট চাহিদার ৫১ শতাংশ বই পাওয়া গেলেও ৪৯ শতাংশ (অর্ধেক) বই এখনো বাকি।
যদিও এখন প্রতিদিনই বই আসছে জানিয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হায়দার হেনরী বলেন, আগে হয়তো কয়েকদিনে কয়েক লাখ বই আসতো। কিন্তু এখন দিনে ৫/৬ লাখ করে বই আসছে। এসব বই সরাসরি থানা/উপজেলার স্টোর রুমে পৌঁছে যাচ্ছে। সেখান থেকে স্কুলে-স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে এবারও বই উৎসব হবেনা বলে ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতবছরের আদলে উৎসব না করে বিকল্প উপায়ে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া হবে। যদিও এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় বা মাউশির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা অফিসার। তিনি বলেন, আমরা এখনো আনুষ্ঠানিক বা লিখিত কোন নির্দেশনা পাইনি। তবে বই উৎসব হবেনা মর্মে গণমাধ্যমে দেয়া শিক্ষা মন্ত্রীর ঘোষণার কথা শুনেছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবেঁচে ফেরাদের বর্ণনায় সুগন্ধা ট্র্যাজেডি
পরবর্তী নিবন্ধলঞ্চটিতে কী ঘটেছিল