কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় ‘মাদক সংশ্লিষ্টতার’ অভিযোগ এনে দুই সন্তানসহ নারীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার বাংগরা বাজার থানার কড়ইবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন বাংগরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান। নিহতরা হলেন, ওই গ্রামের জুয়েল মিয়ার স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুবি (৫৫), তার ছেলে রাসেল মিয়া (২৮) এবং মেয়ে জোনাকি আক্তার (২২)।
ওসি বলেন, স্থানীয়দের দাবি রুবি ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এর জের ধরে সকাল ৯টার দিকে এলাকাবাসী ওই বাড়িতে হামলা করে তাদেরকে পিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। খবর বিডিনিউজের।
এদিকে ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, একটি মোবাইল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে এর সূত্রপাত এবং বুধবার সন্ধ্যায় পরিকল্পনা করে বৃহস্পতিবার সকালে হামলা চালিয়ে তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে। কেউ কেউ অবশ্য বলেছেন, পরিবারটির বিরুদ্ধে দীর্ঘ সময় ধরেই মাদক ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে। পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলাও রয়েছে। তারা এলাকায় বেশ প্রভাবশালী। এ থেকেও এ ঘটনা ঘটতে পারে। খবর বিডিনিউজের।
পুলিশ জানায়, সকাল ৯টার দিকে উপজেলার বাংগরা বাজার থানার কড়ইবাড়ী গ্রামে একটি বাড়িতে মাদক কারবার ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে কিছু লোক হামলা চালায়। হামলায় কড়ইবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা খলিলুর রহমানের স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুবি, তার ছেলে রাসেল ও মেয়ে জোনাকি ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আহত হয়েছেন রুবির মেয়ে রুমি আক্তার (৩০)। তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দুপুরে কড়ইবাড়ী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এক ধরনের সুনসান নিরবতা। বাড়ি ঘিরে উৎসুক মানুষ আছে, কিন্তু কেউ কথা বলছেন না। কড়ইবাড়ী একটি বাসস্ট্যান্ড। রুবির বাড়িটি কড়ইবাড়ী বাসস্ট্যান্ডের কেন্দ্রস্থলে। এর আশপাশে বেশ কিছু দোকানপাটও রয়েছে। এটি মুরাদনগর–নবীনগর আঞ্চলিক সড়কের মধ্যে পড়েছে। এই সড়ক ধরেই কুমিল্লা থেকে মানুষজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাতায়াত করেন।
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান। এ সময় তিনি বলেন, পুলিশ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। কেউ এলাকায় কোনো অপরাধ কর্মকাণ্ড সংঘটিত করলে জনগণের উচিত তাকে পুলিশে সোপর্দ করা। এভাবে আইন হাতে তুলে নেওয়া কাম্য নয়। যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।