মীরসরাই উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে এখন কেবল ধান আর ধান। হেমন্তের সকালে সে ধানের ডগায় শোভা পাচ্ছে মুক্তার মতো ঝলমলে শিশির বিন্দু। কোথাও কোথাও এরই মধ্যে সবুজ ধান পেকে সোনালি বর্ণ ধারণ করেছে। কদিন পর সে পাকা ধান ঘরে উঠবে। কৃষক-কৃষাণীরা মেতে উঠবেন নবান্ন উৎসবে। অথচ চিত্রাংসহ নানান প্রতিকূল আবহাওয়ায় এবার শঙ্কা ছিল কাঙ্ক্ষিত ফলন না পাওয়ার। তবে কৃষক ও কৃষি বিভাগ বলছে, বরাবরের মতো এবারও ভালো ফলনই হয়েছে। মীরসরাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবার মীরসরাই উপজেলায় আমনের চাষাবাদ হয়েছে ১৯ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে। মৌসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার দরুন গত বছরের তুলনায় এবার ৯২৫ হেক্টর কম জমিতে আবাদ হয়েছে। এরই মধ্যে আবার চিত্রাং এর আঘাতে ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে কিছুটা। সব কাটিয়ে তবু প্রত্যাশার চেয়ে ভাল ফলনের আশাই করছে কৃষক ও কৃষি বিভাগ।
উপজেলার খৈয়াছড়া গ্রামের কৃষক আমিনুল হক (৪৮) বলেন, তিন কানি জমিতে ধান রোপণ করেছি এবার। দেরিতে রোপণ করায় বৃষ্টি নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ফাঁকে ফাঁকে কিছু বৃষ্টির দেখা পাওয়ায় দুশ্চিন্তা দূর হলেও চিত্রাংয়ের হানায় জড়ো তাণ্ডবে কিছু ধানের গাছ নুইয়ে পড়েছিল। তবে সেগুলোতেও ফলন ঠিকঠাক হয়েছে দেখা যাচ্ছে। আর এক সপ্তাহ পর থেকে কাটার উপযোগী হয়ে যাবে। আশা করছি ধানের ভালো ফলনই পাব। দামও পাব আশানুরূপ। জনার্দনপুর গ্রামের কৃষক হারাধন পাল (৫২) বলেন, আমাদের আমন মাঠে তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এখন আবহাওয়াও অনুকূলে আছে। কার্তিক মাসের শেষ দিকে ধান ঘরে তুলতে পারব।
মীরসরাই উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার নুরুল আলম বলেন, বারবার প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়ে আমনে এবার এতটা ভালো ফলন হবে আশা করি নাই। এবার আমাদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৮৮ হাজার ৯৮৭ মেট্রিক টন ধান। প্রত্যাশার চেয়ে ভাল ফলনে কৃষকদের পাশাপাশি আমরাও খুশি। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রঘুনাথ সাহা বলেন, দেশে উৎপাদনে আরো স্বনির্ভরতা আনতে আমরা আমনের পরপরই বোরোর বীজ ও সার প্রণোদনাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। পরবর্তীতে আরো ভাল ফলনের বিষয়ে সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।