উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিদর্শনে গিয়ে আটকা পড়া আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার নয় ঘণ্টা পর পুলিশি পাহারায় বের হতে পেরেছেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাদের বহন করা পতাকাবিহীন সরকারি গাড়ি মেট্রোরেলের ডিপোর ভেতরের রাস্তা দিয়ে বেরিয়ে যায়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমসহ আরও তিনজন এ সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন। তারাও সারাদিন কলেজে আটকা ছিলেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের উপ–কমিশনার (ডিসি) মো. মহিদুল ইসলাম এক ব্রিফিংয়ে বলেন, উপদেষ্টারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে এসেছিলেন। পরে শিক্ষার্থীরা তাদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া জানান। সব দাবি মেনে নেওয়ার পরও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে রাখেন। এজন্য উপদেষ্টারা বের হতে পারছিলেন না। সন্ধ্যার দিকে শিক্ষার্থীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর তারা বেরিয়ে গেছেন। এর আগে বিকালে একবার পুলিশি পাহারায় দুই উপদেষ্টা স্কুল ক্যাম্পাস ছাড়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। খবর বিডিনিউজের।
এ স্কুল ক্যাম্পাসে সোমবারের বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় ক্ষতিপূরণসহ ছয় দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। বেলা পৌনে ১০টায় ঘটনাস্থলে এসে তোপের মুখে পড়েন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। পরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন আইন উপদেষ্টা। শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং উপ প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন। ওই বৈঠকের পর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বেরিয়ে এসে আসিফ নজরুল বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সব দাবি ‘মেনে নেওয়ার’ আশ্বাস দেন। আইন উপদেষ্টা কথা শেষ হওয়ার পরপরই তাদের দিকে তেড়ে যায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। দুই উপদেষ্টা এবং প্রেস সচিব তখন স্কুলের সম্মেলন কক্ষে চলে যান। দুপুর সোয়া ২টার দিকে উপদেষ্টারা বের হবেন শোনার পর শিক্ষার্থীদের একটি দল মূল ফটক আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের একটি ডাবল কেবিন পিকআপও ভাংচুরও করা হয়। এ সময় কয়েক প্লাটুন দাঙ্গা পুলিশ আসতে দেখা যায়। বিকেল ৩টার দিকে এক প্লাটুন এপিবিএন, কয়েক প্লাটুন ডিএমপির রিজার্ভ পুলিশ, এক প্লাটুন এটিইউ আসে মাইলস্টোন ক্যাম্পাসে। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তারা পতাকাবিহীন সরকারি গাড়িতে চেপে সামনে পেছনে কয়েকশ পুলিশের পাহারা নিয়ে স্কুল ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু স্কুলের বাইরে গোল চত্বরে কয়েকশ শিক্ষার্থীর অবস্থানের কারণে ১৫ মিনিট পর তারা আবার ভেতরে ফিরে যান। সন্ধ্যার পর পুলিশ গোলচত্বর থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিলে দুই উপদেষ্টার ফেরার সুযোগ তৈরি হয়।