মাইকেল এঞ্জেলো(১৪৭৫–১৫৬৪)। তিনি ছিলেন রেনেসাঁস যুগের একজন ইতালীয় ভাস্কর, চিত্রকর, স্থপতি এবং কবি। তার বৈচিত্র্যময় তার ব্যাপ্তি এবং বিস্তৃতির কারণে মাইকেল এঞ্জেলোকে রেনেসাঁ মানব বলে বর্ণনা করা হয়। মাইকেল এঞ্জেলোর জন্ম ১৪৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ৬ ই মার্চ, ইতালির ক্যাপিসিতে। তার পুরো নাম মাইকেলেঞ্জেলো দি লোদোভিকো বুওনারোত্তি সিমোনি। ছয় বছর বয়সে মাকে হারিয়ে সেত্তিগনানো শহরে এক পাথর খোদাইকারীর পরিবারের সঙ্গে বসবাস শুরু করেন। কিশোর বয়সে মাইকেলেঞ্জেলো ফ্লোরেন্সে মানবতাবাদী ফ্রান্সেসকো ডা আরবিনোর কাছে ব্যাকরণের ওপর তালিম নেন। কিন্তু তার ঝোঁক ছিল ছবি আঁকার ওপর। তখন ফ্লোরেন্স ছিল ইতালির চিত্রশিল্পীদের প্রাণকেন্দ্র। ফলে চার্চের ছবি নকল করা ও শিল্পীদের কাছাকাছি থাকতে পছন্দ করতেন তিনি। ১৪৮৮ খ্রিষ্টাব্দে মাত্র ১৩ বছর বয়সে তিনি বিখ্যাত শিল্পী ডমেনিকো গিল্যান্ডায়োর কাছে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ শুরু করেন। এর পরের বছরই শিল্পী হিসেবে গিল্যান্ডায়োর কাছ থেকে মাসোয়ারা পান। ছবি আঁকায় খ্যাতিমান হলেও তাঁর নিজের আগ্রহ বাড়ে ভাস্কর্য নির্মাণে। তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত ভাস্কর্য হলো পিয়েতা ও ডেভিড। ফ্রেসকো রীতিতে তিনি রোমের সিস্টিন চ্যাপেলের সিলিংয়ে বাইবেলের বুক অব জেনেসিস অবলম্বনে আঁকেন ৯ খণ্ড ছবি ও দেয়ালে আঁকেন ‘দ্য লাস্ট জাজমেন্ট’ নামের বিখ্যাত চিত্রকর্ম। ভাস্কর বা চিত্রশিল্পী ছাড়াও অ্যাঞ্জেলোর ছিল আরও একটি পরিচয়। স্থপতি হিসেবেও বেশ নামডাক ছিল তার। ভাস্কর্য, চিত্রকলার মতো এই ক্ষেত্রেও দক্ষতার ছাপ রেখেছেন তিনি। এর পরিচয় পাওয়া যায় ভ্যাটিকান সিটিতে অবস্থিত ‘সেন্ট পিটার’স ব্যাসিলিকা’ থেকে। তৎকালে এটাই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় গীর্জা। ষোড়শ শতকের শিল্পীদের মধ্যে তাঁরই বিভিন্ন কাজ, খসড়া চিত্র সবচেয়ে বেশি পরিমাণে সংরক্ষিত হয়েছে। জীবদ্দশায় তাঁকে ‘দ্য ডিভাইন ওয়ান’ নামে ডাকা হতো। ১৫৬৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ ই ফেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।