মা-বাবা বিধাতার শ্রেষ্ঠ উপহার

ইশরাত জাহান তালুকদার | সোমবার , ৬ নভেম্বর, ২০২৩ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

মাবাবা বিধাতার দেওয়া শ্রেষ্ঠ নিয়ামত এবং উপহার সন্তানের জন্য। আবার সেই মাবাবা পরিপূর্ণ হন সন্তানের আগমনে। সন্তান আগমনের পূর্বে মাবাবা কখনোই ভাবেন না সন্তান কেমন হবে! ভালো না মন্দ হবে, সুস্থ না অসুস্থ হবে! মাবাবা কেবল মাবাবা হতে পারলেই যেন বেহেশতের চাবি হাতে পেয়ে যান। যাদের সন্তান নেই তারা একটি সন্তানের জন্য কাতর থাকেন।

মাবাবা সন্তানকে মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তুলতে কতইনা কষ্ট করে যান। সন্তান লালনপালনে মাবাবারা উহঃ শব্দটি করেন না। কোনও কষ্টই তাদের যেন ছুঁতে পারে না কোনও ছলে। মাবাবা এক অন্তরিক্ষের নাম! যে সীমানায় কেবল ভালোবাসা আর স্বাচ্ছন্দ্য। প্রথম শিক্ষক হিসেবে মাবাবাকে কাছে পাওয়া, প্রথম মা ডাকে মায়ের আত্মতৃপ্তি, প্রথম বাবা ডাকে বাবার আত্মউল্লাস, সন্তানের সাফল্যে মাবাবার বিজয়ী কান্না, সন্তানের ভাগ্যে চিরন্তন ভরসার ছোঁয়া, সন্তানের অসুস্থতায় মাবাবার বিচলিত প্রাণ, সন্তানের প্রয়োজনের কাছে মাবাবার প্রয়োজন ক্ষীণ হওয়া, সন্তানের ব্যর্থতায় মাবাবার পাশে থাকা, সন্তানের কল্যাণে মাবাবার নির্ঘুম রাতের প্রহর, মাবাবার কাছে চিরন্তন সুখে থাকা, লালিতপালিত হওয়া, মাবাবার ছায়াতলে থাকা, বিপদের পরম আশ্রয়ে মাবাবাকে কাছে পাওয়া, বটবৃক্ষ হিসেবে বাবাকে এবং ছায়া হিসেবে মা কে পাওয়ার সেই সৌভাগ্যের সময়টা আমার কাছে ‘এ বেলা’। আর আমার কাছে ‘ও বেলা’ হলো, যে বেলায় কিছু সন্তান প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর মাবাবার প্রতি অবহেলার চরম ও নির্মম দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দেয়। ‘ও বেলায়’ এসে মাবাবার প্রশান্তির জায়গা হারিয়ে যায়। ‘ও বেলায়’ এসে মাবাবাকে ঠাঁই করে দেয় বৃদ্ধাশ্রমে। সন্তানকে কাছে পাওয়ার আকুতিতে ‘ও বেলা’ বড্ড অসহায় করে দেয়। ‘ও বেলা’ যেন অভিশপ্ত পদ্ম পুকুর, যেখানে মানুষ ডুব দিলে আর উঠে আসার সম্ভাবনা থাকে না। হাহাকার আর শূন্যতা যেন ‘ও বেলার’ খোরাগ। আমরা সন্তানেরা কি পারি না ‘ও বেলা’ মুছে ‘সে বেলা’ ফিরিয়ে আনতে, যে বেলায় আমরা মাবাবার বুকে প্রশান্তি মনে ঠাঁই নিয়ে চিরসুখের অভিলাষে নতুন দিগন্ত উন্মোচনে মিলিত হবো সকলে? আমাদের যে পারতেই হবে। তা না হলে মাবাবার বুকে সন্তান কামনার প্রয়াস যে কলঙ্কিত হবে!

পূর্ববর্তী নিবন্ধমা বাবাকে নিয়ে দুটো কথা
পরবর্তী নিবন্ধযেভাবে গড়ে উঠছে আমাদের স্মার্ট সোসাইটি