পৃথিবীর সবচেয়ে সুমধুর ডাক ‘মা’। আনন্দ, বেদনা আর কল্পরাজ্যের যতসব অনুভূতির আলোড়ন–সবই মাকে ঘিরে। ‘মা’ শব্দটি নিজেই একটি অসমাপ্ত গল্প, শ্রেষ্ঠ কবিতা, সময়ের সেরা উপন্যাস..
মানব ইতিহাসের শুরু থেকেই ‘মা’ একটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ হিসেবে বিবেচিত। মা, মাদার, মম, মাম, আম্মা–যাই বলি না কেন, একজন সন্তানের কাছে তার মায়ের চেয়ে অধিক প্রিয় কোনও কিছুই এই পৃথিবীতে নেই। তাই যুগ যুগ ধরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মাকে নিয়ে কবিতা গান রচনা আজও অব্যাহত রয়েছে। কবি নজরুলের ভাষায়– যেখানেতে দেখি যাহা/মা–এর মতন আহা/একটি কথায় এত সুধা মেশা নাই/মায়ের মতন এত আদর সোহাগ সে তো/আর কোনখানে কেহ পাইবে ভাই! অথবা কামিনী রায়ের-‘‘জড়ায়ে মায়ের গলা, শিশু কহে হাসি/ মা তোমারে কত ভালবাসি/ কত ভালোবাস ধন? জননী শুধায়/ “এত বলি দুই হাত প্রসারি দেখায়? তুমি মা আমায় ভালোবাস কতখানি? মা বলে মাপ তার আমি নাহি জানি/ তবু কতখানি বল, যতখানি ধরে তোমার মায়ের বুকে নহে তার পরে।’’
অভিধানের ভাষায় মা সে–ই, যিনি একজন পূর্ণাঙ্গ নারী। যিনি গর্ভধারণ করেন, সন্তানের জন্ম দেন এবং সন্তানকে বড় করে তোলেন। তিনিই অভিভাবকের ভূমিকা পালনে সক্ষম ও মা হিসেবে সর্বত্র পরিচিত। প্রকৃতিগতভাবে একজন নারী বা মহিলাই সন্তানকে জন্ম দেওয়ার অধিকারিণী। গর্ভধারণের মতো জটিল এবং মায়ের সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় অবস্থানে থেকে এই সংজ্ঞাটি বিশ্বজনীনভাবে গৃহীত হয়েছে। এ কারণেই পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় এবং মধুরতম শব্দটি ‘মা’। মা শুধু প্রিয় শব্দই নয়, প্রিয় বচন, প্রিয় অনুভূতি, প্রিয় ব্যক্তি, প্রিয় দেখাশোনা, প্রিয় রান্না এবং প্রিয় আদর। যতগুলো প্রিয় আছে তার সব প্রিয়ই শুধুমাত্র মাকে কেন্দ্র করেই। পৃথিবীর ইতিহাসে সন্তানের জন্মদাত্রী হিসেবে প্রাকৃতিকভাবেই মায়ের এই অবস্থান। মানব সমাজে যেমন মায়ের অবস্থান রয়েছে। পশুর মধ্যেও মাতৃত্ববোধ প্রবল। সৃষ্টির আদিলগ্ন থেকেই মা যাবতীয় মমতার আধার ও কেন্দ্র্রবিন্দু। তাই পৃথিবীর অধিকাংশ ভাষায়ই মা–এর সমার্থক শব্দটি ‘ম’ ধ্বনি দিয়ে শুরু। ভালোবাসার ছোঁয়ায় একবার মা–কে জড়িয়ে ধরে শুধু বলো ‘মা’ আমি তোমায় ভালোবাসী। একটু মাথায় হাত বুলিয়ে দাও।












