কক্সকবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে মাহিয়া নামের সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ের মোঃ সোলাইমান (৩২) নামের এক যুবককে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মোঃ ওসমান গণি এই রায় ঘোষণা করেন। একই সাথে অপহরণ, মৃতদেহ গুমের দায়ে দুইধাপে যাবজ্জামান কারাদন্ডও দেয়া হয়েছে। দন্ডপ্রাপ্ত যুবক সোলেমান উখিয়ার উপজেলার পালংখালী চাকমারকুল এলাকার সৈয়দ করিমের পুত্র।
রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ বিশেষ পাবলিক প্রসিকউটির মোশারফ হোসেন টিটু।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সোলাইমান মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পে কাজ নেয়। এরপর বিয়ে করে ওই বছরের অক্টোবর সে মাহির চাচার বাসা ভাড়া নেয়। সেখানে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছিল। এক পর্যায়ে ৩০ নভেম্বর মাহিয়া স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর খেলতে বের হয়। এ সময় বাড়িতে স্ত্রী না থাকার সুযোগে চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে অপহরণ করে ভাড়া বাসায় নিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করে সোলাইমান।
এতে মাহি অজ্ঞান হয়ে পড়লে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাগেজের ভেতর ঢুকিয়ে রাতের অন্ধকারে অটোরিকশায় করে পার্শ্ববর্তী পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের করিয়ারদিয়া এলাকায় লবণমাঠে ফেলে দেয়। এরপরদিনই পুলিশ সোলাইমান ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করেন।
কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ বিশেষ পাবলিক প্রসিকউটির মোশারফ হোসেন টিটু জানান, ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ইউনিয়নের দক্ষিণ সাইরার ডেইল এলাকার আয়াত উল্লাহর মেয়ে ও দক্ষিণ সাইরার ডেইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী মাহিয়াকে অপহরণের পর ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর মরদেহ পেকুয়ার উজানটিয়ার কররিয়ারদিয়ার লবণ মাঠে ফেলে দেন উখিয়ার উপজেলার পালংখালী চাকমারকুল এলাকার সৈয়দ করিমের পুত্র মোঃ সোলাইমান।
এই ঘটনায় নিহত শিশুর পিতা বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে জনাকীর্ণ আদালতে বিচারক রায় ঘোষণা করেছেন। রায়ে হত্যা, অপহরণ, মৃতদেহ গুমসহ আরো একটি ধারায় মৃত্যুদন্ড, দুইধাপে যাবজ্জীবন ও সাত বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়।
তিনি বলেন, সোলাইমান আরে আগে টকনাফে তার বিবাহিত স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করতে হত্যা করে। এই ঘটনার পর পলাতক অবস্থায় শিশু মাহিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যা করে। এই ঘটনাও আমলে রেখে বিচারক পর্যবেক্ষণে বলেছেন, “সোলাইমান একজন সিরিয়ার কিলার হিসেবে অবতীর্ণ হতে যাচ্ছিল। তাকে এই মুহূর্তে না থামালে এরকম ঘটনা ঘটাতে থাকবে।
রায় ঘোষণাকালে একমাত্র আসামি মোঃ সোলাইমান আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এই রায়ে শিশুর মাহিয়ার পিতা আয়াত, আইনজীবি ও রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তবে আসামপিক্ষ জানিয়েছে তারা ন্যায় বিচার পায়নি। তাই উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।