মহেশখালীতে বিআইডব্লিউটিএর আপত্তির পরও গাছ কেটে এলজিইডির জেটি নির্মাণ

কেটেছে প্যারাবনের কয়েক হাজার বাইনগাছ

| সোমবার , ১৯ মে, ২০২৫ at ৭:৩৫ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএর আপত্তি উপেক্ষা করে কক্সবাজারের মহেশখালী চ্যানেলের গোরকঘাটায় জেটি নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি। মহেশখালী চ্যানেলের মোহনায় এবং চরভূমিতে এই জেটি নির্মাণ করতে গিয়ে এলজিইডি কেটেছে প্যারাবনের কয়েক হাজার বাইনগাছ। তাদের নির্মিত কাঠামোর কারণে চ্যানেল ভরাট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত ২৪ এপ্রিল কক্সবাজার পরিদর্শনে এসে নৌ ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিআইডব্লিউটিএর অনুমোদন ছাড়াই জেটিটি নির্মাণ করা হয়েছে এবং এতে অবৈধভাবে গাছ কাটা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।

বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক (বন্দর) নয়ন শীল বলেন, এলজিইডির অননুমোদিত নির্মাণের কারণে মহেশখালী চ্যানেল ভরাট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। কাজ শুরুর সময় আমরা তাদের একটি চিঠি দিয়ে কাজ বন্ধ করতে বলেছিলাম, কিন্তু তারা আমাদের আপত্তি আমলে নেয়নি।

এই চিঠি যখন দেওয়া হয়েছিল তিনি তখন কক্সবাজারে কর্মরত ছিলেন জানিয়ে আরো বলেন, কাজ বন্ধে নতুন আরো একটি চিঠি প্রস্তুত করা হচ্ছে। নদী জলপথ বা চরভূমিতে কিছু নির্মাণ করতে হলে বিআইডব্লিউটিএর অনুমোদন লাগবে। এলজিইডি আমাদের অনুমতি নেয়নি তারা নিয়ম ভেঙেছে।

সম্প্রতি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, মহেশখালী উপজেলার গোরকঘাটা এলাকায় চ্যানেল ও চরভূমিতে পাইলিংয়ের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে হাজার হাজার ম্যানগ্রোভ গাছ কাটা হয়েছে। যেখানে এলজিইডি মূল চ্যানেলে নতুন জেটি নির্মাণ করছে সেখান থেকে মাত্র ৩০০ মিটারের ভেতরে গোরকঘাটা খালে একটি পুরনো জেটি রয়েছে, যা চ্যানেলের সঙ্গেও সংযুক্ত।

এলজিইডি মহেশখালী উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ বনি আমিন বলেন, নির্মাণাধীন জেটিটি ৭০০ মিটার দীর্ঘ ও ৭ দশমিক ৩ মিটার প্রশস্ত, যার সঙ্গে ৩০০ মিটার সংযোগ সড়ক রয়েছে। ৩৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকার এই প্রকল্প শুরু হয়েছে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে। জেটির ভিত্তিকাজ শেষ হয়েছে। পুরনো জেটিটি মাত্র ১০ ফুট প্রশস্ত আর আমাদেরটা ২৪ ফুট। এই প্রকল্প এলাকার জনস্বার্থে করা হচ্ছে।

তবে যে গাছগুলো কাটা হয়েছে সেগুলো ২০০৩০৪ অর্থবছরে উপকূলীয় প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে রোপণ করা হয়েছিল। বন বিভাগ থেকে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৩১ জুলাই উপকূলীয় বনায়ন বিভাগ চট্টগ্রাম থেকে এলজিইডি কক্সবাজার অফিসে একটি আপত্তিপত্র পাঠানো হয়। যেখানে বলা হয়, এমন গাছ কাটতে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন বাধ্যতামূলক।

এলজিইডির কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খান বলেন, তারা বন বিভাগের অনুমতি নিয়েছেন, তবে বিআইডব্লিউটিএর অনুমতি নেননি। বিআইডব্লিউটিএর আপত্তির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, চিঠির বিষয়টি তিনি স্মরণ করতে পারেননি। জেটি নির্মাণের আগে কোনো সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়েছে কিনা তাও নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতিন বন্ধু নামলেন সাগরে, স্রোতে তলিয়ে গেলেন একজন
পরবর্তী নিবন্ধকর্ণফুলীতে ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার দুই