মহেশখালীতে পাচারের উদ্দেশ্যে খাঁচায় বন্দি করে তালাবদ্ধ বাড়িতে আটকে রাখা অবস্থা হতে ১২টি হনুমান উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের বাড়িয়ার ছড়ি পাহাড়ি এলাকা থেকে হনুমানগুলো উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাপলাপুর বিট কর্মকর্তা নুরে আলম মিয়া নাহিদ।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শাপলাপুরের বারিয়ার ছড়ি এলাকায় পাহাড়ের ভেতরে জনৈক আমিনুল ইসলাম চৌধুরীর পরিত্যক্ত একটি বাড়িতে বিলুপ্ত প্রায় ১২টি হনুমান পাচারের উদ্দেশ্যে খাঁচায় আটকে রাখা হয়েছে; এমন সংবাদের ভিত্তিতে বন বিভাগ অভিযান চালিয়ে বাচ্চাসহ ১২টি হনুমান উদ্ধার করে। পরিত্যক্ত বাড়িটিতে কোন মানুষ না থাকায় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। নুরে আলম মিয়া নাহিদ বলেন, মহেশখালীর পাহাড় থেকে বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণী পাচার করার গোপন সংবাদ ছিল। পাচার চক্রে কারা জড়িত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা ও বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলানের জানান, দেশে তিন প্রজাতির হনুমানের দেখা মেলে যার মধ্যে একটি হল কালো মুখ হনুমান (ঐধহঁসধহ খধহমঁৎ)। বুনো পরিবেশে এদের গড় আয়ু ১৮–৩০ বছর। সাধারণত জুলাই–অক্টোবর বা কোনো–কোনো ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল এদের প্রজননকাল। স্ত্রী হনুমান ২০০ থেকে ২১২ দিন গর্ভধারণের পর সাধারণত ১/২টি বাচ্চা প্রসব করে। হনুমানের এই প্রজাতিটি গাছের কঁচিপাতা, শাকসবজি, ফলমূল ও ফুল খেয়ে জীবনধারণ করে। তবে বসতবাড়ির কাছাকাছি বসবাস করায় মানুষের খাবারেও এরা অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। তিনি আরও জানান, বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন)- ২০১২ অনুযায়ী হনুমানের এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত। তাই এটি হত্যা বা এর কোনো ক্ষতি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আমির হামজা কালু, গণমাধ্যমের লোকজন এবং বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট অফিসারবৃন্দের উপস্থিতিতে দিনেশপুর বিটের অধীনে জাম বাগান এলাকায় বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীকি মারমা, উপকূলীয় বন বিভাগ চট্টগ্রামের এসিএফ মো. আবুল কালাম আজাদ, ডিএফও মো. বেলায়েত হোসেনের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে উদ্ধারকৃত ১২টি হনুমান অবমুক্ত করা হয় বলে জানান।