মহামারীকালের দ্বিতীয় বাজেট পাস

| বৃহস্পতিবার , ১ জুলাই, ২০২১ at ৬:২৪ পূর্বাহ্ণ

এক দিন বাদে শুরু হতে যাওয়া নতুন অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করেছে সংসদ। বুধবার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশনে আগামী অর্থবছরের জন্য এই বাজেট কণ্ঠভোটে পাস হয়। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার থেকেই কার্যকর হবে এ বাজেট। গত ৩ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল সরকারের
এই ব্যয়ের ফর্দ সংসদে তুলে ধরেছিলেন। অর্থমন্ত্রীর বাজেট পেশের পর পুরো অধিবেশন জুড়ে এর ওপর আলোচনা করেন সংসদ সদস্যরা। তবে মহামারীর কারণে গতবারের মত এবারও বাজেটের ওপর আলোচনা হয়েছে সীমিত আকারে। খবর বিডিনিউজের।
দুই দিন আলোচনা করেই চলতি ২০২০-২১ অর্থ বছরের সম্পূরক বাজেট পাস হয়। সপ্তাহখানেক বিরতি দিয়ে টানা চার দিন ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনা চলে। এরপর আরও ১০ দিন বিরতি দিয়ে দুই দিন বাজেটের ওপর আলোচনা হয়। সব মিলিয়ে শতাধিক সংসদ সদস্য এবার বাজেটের উপর আলোচনা করেন। সম্পূরক বাজেটসহ বাজেটের উপর ছয় দিনে ১৫ ঘণ্টার মতো আলোচনা হয়। এর আগে গত বছর বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত বাজেট অধিবেশন হয়েছিল। নয় দিনের ওই বাজেট অধিবেশনে ১৮ জন সংসদ সদস্য ৫ ঘণ্টা ১৮ মিনিট আলোচনা করেছিলেন। সচরাচর বাজেট অধিবেশন দীর্ঘ হয়। অধিবেশনে সম্পূরক বাজেটের উপর দুই থেকে চার দিন এবং সাধারণ বাজেট এবং উপর ১২ থেকে ১৫ দিন আলোচনা হয়। বাজেট নিয়ে ৫০ থেকে শুরু করে ৬৫ ঘণ্টার মত আলোচনা রেকর্ড রয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে বসা অধিবেশনে সংক্রমণ এড়াতে প্রতিদিন ৮০-১০০ জন আইনপ্রণেতাকে নিয়ে বসে সংসদ অধিবেশন। সংসদ সদস্যসহ সংসদ সচিবালয়ে কর্মরতদের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করে সংসদে ঢুকতে হয়েছে। কয়েকজন সংসদ সদস্যের সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার সংসদে অর্থবিল পাস হয়। অর্থবিলে বিনাপ্রশ্নে নগদ টাকা, নতুন শিল্পে বিনিয়োগ, পুঁজিবাজার, ফ্ল্যাট ও প্লট, ব্যাংক আমানতসহ বেশ কয়েকটি খাতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আশা করছেন, তার নতুন বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারলে মূল্যস্ফীতি ৫.৩ শতাংশের মধ্যে আটকে রেখেই ৭.২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি পাওয়া সম্ভব হবে।
বুধবার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনের শুরুতেই বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মঞ্জুরি দাবিতে আলোচনা করার কথা জানান। বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা এসব দাবিতে আলোচনা করেন।
নির্দিষ্টকরণ বিল পাস : আগামী অর্থবছরের বাজেট ব্যয়ের বাইরে সরকারের বিভিন্ন ধরনের সংযুক্ত দায় মিলিয়ে মোট সাত লাখ ৯২ হাজার ৯১২ কোটি ৯৫ লাখ নয় হাজার টাকার নির্দিষ্টকরণ বিল জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে পাস হয়েছে। এর মধ্যে, সংসদ সদস্যদের ভোটে গৃহীত অর্থের পরিমাণ পাঁচ লাখ ৫৪ হাজার ৩২ কোটি ৭১ লাখ নয় হাজার টাকা এবং সংযুক্ত তহবিলের ওপর দায় দুই লাখ ৩৮ হাজার ৮৮০ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
সংযুক্ত তহবিলের দায়ের মধ্যে ট্রেজারি বিলের দায় পরিশোধ, হাই কোর্টের বিচারপতি ও মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের বেতনও অন্তর্ভুক্ত।
মঞ্জুরি দাবি ও ছাঁটাই প্রস্তাব : আগামী অর্থবছরের বাজেটের ওপর সংসদে উত্থাপিত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ খাতের ৫৯টি মঞ্জুরি দাবির বিপরীতে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, বিএনপির ১২ জন সংদ সদস্য ৬২৫টি বিভিন্ন ধরনের ছাঁটাই প্রস্তাব আনেন। এর মধ্যে আইন ও বিচার বিভাগ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের দাবী ও ছাঁটাই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। বিরোধী দলের আলোচনার পর সবগুলো প্রস্তাব কণ্ঠভোটে বাতিল হয়ে যায়। দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়ের মঞ্জুরি দাবি সংসদে তোলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বন্ধ, আন্তর্জাতিক চলবে
পরবর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা চালু