মহাদেবী ভার্মা (১৯০৭–১৯৮৭)। হিন্দি সাহিত্যের একজন খ্যাতিমান কবি ও লেখিকা। তিনি নারী শিক্ষার প্রসারেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। ১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে মার্চ ভারতের উত্তর প্রদেশের ফারুকাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা গোবিন্দ প্রসাদ ভার্মা ভাগলপুরের একটি কলেজে অধ্যাপক ছিলেন। তাঁর মাতার নাম হেম রানি দেবী। মহাদেবী ভার্মা এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে বি এ এবং ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে এম এ পাশ করেন।এলাহাবাদের ‘প্রয়াগ মহিলা বিদ্যাপীঠ’এ তিনি বহুবছর অধ্যক্ষা এবং উপাচার্য ছিলেন। ভার্মার ক্যারিয়ার ছিলো সবসময়ই লেখালেখি, সম্পাদনা এবং শিক্ষাদানকে ঘিরে। তিনি এলাহাবাদে প্রয়াগ মহিলা বিদ্যাপীঠের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন। এই জাতীয় দায়বদ্ধতা ছিল সেই সময়ে মহিলা শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি বিপ্লবী পদক্ষেপ। ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মহিলাদের শীর্ষস্থানীয় ম্যাগাজিন ‘চাঁদ’র দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে ভার্মা এলাহাবাদে ইলাচন্দ্র জোশীর সহায়তায় সাহিত্য সংসদ প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর প্রকাশনার সম্পাদনা গ্রহণ করেন। ছায়াবাদী ঘরানার একজন গুরুত্বপূর্ণ কবি মহাদেবী বর্মা। তিনি চিত্রকর হিসাবেও খ্যাতিলাভ করেন। ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে তাদের শিল্পকর্মের সাথে চারটি কাব্যগ্রন্থ সংকলন প্রকাশিত হয়েছিল। এছাড়াও তিনি ১৮ টি উপন্যাস এবং অনেক ছোট গল্প লিখেছিলেন। তিনি ভারতে নারীবাদের প্রবর্তক হিসেবেও বিবেচিত হন। অসাধারণ সাহিত্যকর্মের জন্য অল্পকিছুদিনের মধ্যেই তিনি হিন্দী সাহিত্যজগতে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেন।
১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে হিন্দী সাহিত্য সম্মেলনে তাঁর ‘নীরজা’ গ্রন্থটির জন্য ‘সেক্ষরীয় পুরস্কার’ লাভ করেন । মহাদেবী ভার্মাকে হিন্দি সাহিত্যের মহান কবি সূর্যকান্ত ত্রিপাঠী নিরালা ‘সরস্বতী’র উপাধি দিয়েছেন। ভারত সরকার তাঁকে ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে পদ্মভূষণ, ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে পদ্মবিভূষণ এবং ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার জ্ঞানপীঠ পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছে। ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দের ১১ই সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।