সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের সামনে চকবাজার থানা ছাত্রলীগ ও কলেজ ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এ সময় শিক্ষার্থী–অভিভাবক ও পথচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল সোমবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে মহসিন কলেজের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এতে আহতরা হলেন– মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কাজী নাঈম, মফিজুর রহমান (বিএসএস ফাইনাল), বিবিএস তৃতীয় বর্ষের আরমান হোসাইন, চতুর্থ বর্ষের মোহাম্মদ তাকিব, দ্বিতীয় বর্ষের আরবিন আরমান, সাইদুল (বিএসএস ৩য় বর্ষ), নাফিস (বিবিএস ২য় বর্ষ), শিহাব (বিএসএস ২য় বর্ষ), রিমন ও অন্তর (এইচএসসি ২য় বর্ষ)।
এ ব্যাপারে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওয়ালী উদ্দিন আকবর জানান, মহসিন কলেজের সামনে কথা কাটাকাটির জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মায়মুন উদ্দীন বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কর্মসূচির অংশ হিসেবে কলেজ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিশ্বব্যাপী চলমান ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে সমাবেশ শেষে কলেজ গেট থেকে পদযাত্রা বের করি। পদযাত্রাটি চকবাজার ঘুরে এসে কলেজ গেটে আসার সাথে সাথে চকবাজার থানা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহেদের নেতৃত্বে বহিরাগতরা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। এসময় আমরা কলেজ ছাত্রলীগ–শিক্ষার্থী সবাই তাদেরকে প্রতিহত করি। এতে আমাদের ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। জাহেদের নেতৃত্বে যারা কলেজ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়েছে–তারা কেউ ছাত্রলীগ নয়, সবাই গনি বেকারী এলাকার কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। চকবাজার থানা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহেদের নেতৃত্বে তারা অনেক দিন থেকে কলেজে অধিপত্য বিস্তার করতে চায়। তারা তো কলেজের কেউ না, তারা কলেজে কিভাবে আসবে? কোনো ছাত্রলীগের কর্মী তো কলেজে হামলা চালাতে পারে না। আজকে কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা ছিল। তাদের অতর্কিত হামলায় এসময় পরীক্ষার্থী এবং তাদের অনেকের অভিভাবক আতংকিত হয়ে পড়ে। এসময় পুলিশ এসে তাদেরকে ধাওয়া দিয়ে নিয়ে যায়।
মহসিন কলেজে ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কাজী নাঈম বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কলেজে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করি। এরপর কলেজ থেকে পদযাত্রা নিয়ে বের হয়ে ঘুরে এসে পুনরায় কলেজের প্রধান ফটকে জড়ো হই। হঠাৎ চকবাজার থানা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহেদের নেতৃত্বে এলাকার লোকজন আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমিসহ আমাদের ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। কোনো কথা ছাড়া লাঠি হকিস্টিক দিয়ে হামলা করে। পরে পুলিশ আসলে তারা পালিয়ে যায়। আমি ডান হাতে আঘাত প্রাপ্ত হয়েছি। এ ঘটনায় আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।
চকবাজার থানা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রঘোষিত প্রোগ্রামে অংশ নিতে আমরা সিআরবিতে যাচ্ছিলাম। সিআরবিতে যাওয়ার পথে আমরা টেম্পো ভাড়া করছিলাম। দুইটা টেম্পো ভাড়া করেছি, সেই দুইটাতে আমাদের কর্মীরা বসা ছিল। পরে আরেকটা টেম্পো ভাড়া করলে তখন আমাদের ছেলেরা ওইটাতে ওঠে বসে। এ সময় মহসিন কলেজের মাঠের পাশ দিয়ে তারাও টেম্পো ভাড়া করতে আসে। তাদের বলেছি এ টেম্পো আমরা ভাড় করেছি। তোমরা অন্য একটি ভাড় করো। কিন্তু তাদের কথা হচ্ছে এই টেম্পো তারা নিয়ে যাবে। এ সময় ছাত্রলীগের নাঈম ও মিজানের নেতৃত্বে আমাদের ছেলের ওপর হামলা করা হয়। এতে আমাদের দুই কর্মীর মাথা ফেটে গেছে। আমি নিজেও আহত হয়েছি। এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) সারোয়ার বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে সামান্য হাতাহাতি হয়েছে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে সরিয়ে দিয়েছি। এরপর সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যায়।