মশক নিধনে নগরে ‘ব্যাসিলাস থুরিনজেনসিস ইসরায়েলেনসিস’ (বিটিআই) ব্যবহার শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। গতকাল সোমবার সকালে নগরের ৩৯ নং দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ড কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি শুরু হয়। কর্মসূচির উদ্বোধন করেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব মো. আশরাফুল আমিন।
এর আগে গত ২৬ মার্চ ১৭ নং বাকলিয়া ওয়ার্ডের সৈয়দ শাহ রোডের সামনের খালে পরীক্ষামূলকভাবে বিটিআই লার্ভিসাইড প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সেখানে সাফল্য আসায় এবার পুরোদমে বিটিআই ব্যবহার শুরু করা করা হয় বলে জানান চসিকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। জানা গেছে, ২০২৩ সালে প্রথম বিটিআই ব্যবহার করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। তবে পরবর্তীতে নকল বিটিআই প্রয়োগের অভিযোগ উঠে। এরপর চলতি বছর ঢাকায় গুলশান, বারিধারা ও বনানীতে ব্যক্তিপর্যায়ে বিটিআই ব্যবহার শুরু করে বারিধারা সোসাইটিসহ অন্যান্য সোসাইটিগুলো। সর্বশেষ চসিকও বিটিআই ব্যবহার শুরু করে।
চসিকের সচিব মো. আশরাফুল আমিন আজাদীকে বলেন, আমরা চার–পাঁচটি এলাকায় বিটিআই প্রয়োগ করব। ভালো রেজাল্ট পেলে পুরো শহরে ব্যবহার করব। তিনি বলেন, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত ফগিং, লার্ভিসাইড ছিটানো, নালা–নর্দমা পরিষ্কার, আবর্জনা অপসারণ এবং জনসচেতনতা কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। আশা করছি নতুন প্রজন্মের আমেরিকান প্রযুক্তির বিটিআই ব্যবহারে মশার লার্ভা ধ্বংসে আরও কার্যকর ফল পাওয়া যাবে।
জানা গেছে, বিটিআই হলো একটি প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন ব্যাকটেরিয়াভিত্তিক লার্ভিসাইড, যা বিশেষভাবে মশা, ব্ল্যাক ফ্লাই ও ফাঙ্গাস গ্ন্যাটের লার্ভা দমনে ব্যবহৃত হয়। এটি পানিতে প্রয়োগ করার পর লার্ভা খাদ্যের সঙ্গে বিটিআই গ্রহণ করে এবং ব্যাকটেরিয়ার উৎপাদিত ক্রিস্টাল প্রোটিন টঙিন লার্ভার পরিপাকতন্ত্রে কার্যকর হয়ে তাদের দ্রুত নিধন ঘটায়। সংশ্লিষ্টরা জানান, বিটিআই মানুষের শরীর, গৃহপালিত প্রাণী, মাছসহ অন্যান্য পরিবেশবান্ধব প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর নয়; এমনকি উদ্ভিদ ও জলজ বাস্তুতন্ত্রেও কোনো বিষাক্ত প্রভাব ফেলে না। বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়ার মতো বাহক–বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে এটি একটি নিরাপদ ও বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত সমাধান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
এদিকে গতকাল বিটিআই প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি।












