মরে গেছে ঘাস, তীরে ধরেছে ফাটল

গচ্চা ১ কোটি ৬২ লাখ টাকার প্রকল্প!

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | শুক্রবার , ৭ মে, ২০২১ at ৫:১২ পূর্বাহ্ণ

খাগড়াছড়ির পানছড়িতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নেয়া চেঙ্গী নদীর তীর রক্ষার প্রকল্প ভেস্তে যাচ্ছে। এতে সরকারি টাকা গচ্চা যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। নদীর তীর রক্ষায় বিন্না ঘাস রোপণ করলেও অধিকাংশই মরে গেছে। ঘাস রক্ষায় নিয়মিত পানি দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হয়নি। ঘাস মরে যাওয়ায় নদীর তীর রক্ষা করা যাবে না। নদীর ভাঙনের শঙ্কায় স্থানীয়রা। জানা যায়, ‘স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর( এলজিইডি) ২০২০-২১ অর্থবছরে টেকসই ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ সেক্টর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় চেঙ্গী নদীর উপর ৮০ মিটার ড্যাম প্রকল্পে মেরামতকরণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ৬২ লাখ ৬০ হাজার ৯শ ৮৮ টাকা। এই প্রকল্পের আওতায় সেচনালা নির্মাণ ও নদীর তীর রক্ষায় বিন্না ঘাস লাগানোর উদ্যোগ নেয়া হয়।
প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মের্সাস রীপ এন্টারপ্রাইজ মনোনীত হলেও উপ-ঠিকাদার হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছেন স্থানীয় ঠিকাদার উত্তম কুমার দেব। তিনি ড্যাম সংলগ্ন এলাকায় নদীর তীর রক্ষায় প্রায় ৪শ মিটার এলাকায় বিন্না ঘাস রোপণ করেন। কক্সবাজার থেকে এসব ঘাস নদীর দুই তীরে রোপণ করা হয়। বিন্না ঘাস পাহাড় ধস ও নদীর তীর রক্ষার কাজে ব্যবহার করা হয়। রোপণের পর নিয়মিত সেচের অভাবে বেশির ভাগ ঘাস মরে গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ‘ঘাস দিয়ে নদীর তীর রক্ষা করা যাবে না। ইতোমধ্যে অনেক ঘাস মরে গেছে। নদী রক্ষায় ঘাস লাগানো হলেও ঠিকমতো পরিচর্যা না করায় তা নষ্ট হয়ে গেছে। ’
চেঙ্গী নদীর ড্যাম সংলগ্ন পাড়ার বাসিন্দা প্রতিরঞ্জন চাকমা। তিনি বলেন ,‘আমি এই নদী রক্ষা করার জন্য আবেদন করেছি। আমরা বলেছি ব্লক দিয়ে নদীর ভাঙন রোধ করার জন্য। অথচ উপজেলা প্রকৌশলী বলেছেন ঘাস দিয়ে নদীর তীর রক্ষা করা যাবে। তা সম্ভব না হলে পরবর্তীতে ব্লক দেয়া হবে। নদীর তীরে ঘাস লাগানো হয়েছে শীতকালে। ঠিকমতো পানি দেয়া হয়নি। অধিকাংশ ঘাস মরে গেছে। এছাড়া নদীর তীরে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রকল্প কোনো কাজে আসবে না। ’
একই এলাকার বাসিন্দা চন্দ্র শোভা চাকমা বলেন, ‘ঘাস দিয়ে নদীর তীর রক্ষা করা যাবে না। বেশিরভাগ ঘাস মরে গেছে।’
ঘাস দিয়ে নদীর তীর রক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্পের ঠিকাদার উত্তম কুমার দেব বলেন, প্রকল্প অনুযায়ী আমরা ঘাস লাগিয়েছি। তিনি দাবি করেন, ঘাস রক্ষায় প্রতিদিন কয়েকবার পানি দেয়া হয়।
পানছড়ি উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী অরুণ কুমার দাস বলেন, ‘এখনো প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি। আমরা ঠিকাদারের বিলও পরিশোধ করিনি। ইতোমধ্যে মরা ঘাস রক্ষায় ঠিকাদারকে চিঠি দিয়েছি। মরা ঘাস জীবন্ত করে না দিলে ঠিকাদারের বিল দেয়া হবে না। নদীর তীর রক্ষায় আপাতত ‘কম টাকায়’ বিন্না ঘাস দিয়ে নদীর তীরের মাটি বসানোর কাজ করানো হচ্ছে।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রকৌশলী মিখাইল খান পাকোইমা শহরের নেইবারহুড কাউন্সিলর মেম্বার নির্বাচিত
পরবর্তী নিবন্ধসোনাইছড়িতে খাল ভরাট করে চলছে ভবন নির্মাণ