আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্যে ধর্ষক-দুষ্কৃতকারীরা উৎসাহিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন রুহুল কবির রিজভী। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বিবস্ত্র করে নারী নির্যাতনের বিষয়ে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে মঙ্গলবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব একথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশে কারো নিরাপত্তা নেই। রাষ্ট্র যেখানে মদদ দেয় নিপীড়নকারীকে, সেই দেশে বসবাস করা আসলেই খুব মুশকিল। আইনমন্ত্রী কী বড় বড় কথা বলেন, আরে বাপরে বাপ! মনে হচ্ছে, আইনের অবদান। আজকে তিনি যদি এই টাইপের কথা বলেন যে, এটা (নোয়াখালীর ঘটনা) একটা ষড়যন্ত্র। মর্মমূলে না গিয়ে তিনি আগেই বলে দিলেন। খবর বিডিনিউজের।
রিজভী বলেন, যে দেশে একটি ইউনিয়নের মধ্যে, একটি ওয়ার্ডে এ ধরনের ঘটনা ঘটে অথচ জেলা প্রশাসন ৩২ দিনেও জানে না; যে ধর্ষিত হয়েছে, যার সম্ভ্রমহানি ঘটানো হয়েছে, সে ভয়ে প্রশাসনের কাছে যায় না, থানায় গিয়ে অভিযোগ করতেও ভয় পায়; তাহলে সে দেশে সুসভ্য মানুষ-নাগরিকরা কীভাবে বেঁচে থাকবে? কারণ তারা জানেন, এই সমস্ত অপরাধে যারা অপরাধী রাষ্ট্র তাদের আশ্রয় দেয়। তাই শারীরিকভাবে নির্যাতিত হয়েও তারা আইনশৃক্সখলা বাহিনীর কাছে যেতে পারছে না।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের পাশে কেউ থাকে না, আওয়ামী লীগ থাকে। এই হচ্ছে আওয়ামী লীগ থাকার দৃষ্টান্ত। এমন প্রশাসন তৈরি করা হয়েছে, যে প্রশাসনের কাছে ভিকটিম গিয়ে তার অভিযোগ করতে পারছে না। অথচ কাল আমরা একটা মিছিল করি, পুলিশ দেখবেন সামনে গিয়ে দাঁড়াবে। পেছন থেকে টপাটপ বিএনপির নেতৃবৃন্দকে গ্রেপ্তার করবে। আর যদি আন্দোলনের দিকে যাই তাহলে গায়েন্দা বাহিনী থেকে শুরু করে সবাই এসে তুলে নিয়ে যাবে। এখানে তারা দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন, দক্ষতা দেখিয়েছেন। বিরোধী দলকে দমন করার জন্য, নিপীড়ন-নির্যাতন করার জন্য, ক্রসফায়ার দেওয়ার জন্য এরা এতো দক্ষ ও তৎপর যে এদের তুলনা পাওয়া খুব মুশকিল।
রিজভী বলেন, কেন দুষ্কৃতকারীরা এতো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, কেন প্রশাসন নির্বিকার? এটাতে রাষ্ট্রের মদদ আছে। তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ আছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সাগর-রুনি সাংবাদিক দম্পতি হত্যার ব্যাপারে। আমি কি বেডরুমে পাহারা বসাব। এ কথা বলার মধ্য দিয়ে কিন্তু দুষ্কৃতকারীরা প্রশ্রয় পেয়ে গেলেন, উদ্ধুদ্ধ হয়ে গেলেন যে, ধুর প্রধানমন্ত্রী তো আমাদের শেল্টার দেন।
উল্লেখ্য, জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে জাতীয়তাবাদী উলামা দলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘শহীদ জিয়ার রাজনৈতিক দর্শন, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও আজকের প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।