নগরীর পাহাড়তলী বাজারের একটি ডিমের আড়ত থেকে গত ২৩ আগস্ট অস্ত্রের মুখে ৮০ হাজার টাকা লুটের ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়া মনছুর আহমেদ ওরফে মনছুর ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে খুলশী থানা পুলিশ। তিনি পাহাড়তলীর দুলালাবাদ এলাকার আবদুল মালেক দারোয়ানের বাড়ির মৃত জমির আহাম্মদের ছেলে। গত সোমবার ভোর রাতে বরগুনা সদর থানার কাঠবুনিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে তার দেখানো মতে নগরীর খুলশীর রেলওয়ে ক্যান্টিন গেট এলাকার একটি নালা থেকে একটি দেশীয় এলজি ও ২ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। নালার মাটির নিচে কালো পলিথিন মুড়িয়ে উক্ত অস্ত্র ও কার্তুজ রাখা ছিল।
পুলিশ সূত্র জানায়, ২৩ আগস্ট রাতে অস্ত্রের মুখে পাহাড়তলী বাজারের ব্যবসায়ী মো. হেলালের ডিমের আড়ত থেকে ৮০ হাজার টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। এতে চারজন সম্পৃক্ত ছিলেন। নেতৃত্বে ছিলেন মনছুর। সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, ডিমের আড়তটিতে হঠাৎ অস্ত্র নিয়ে ঢুকে পড়েন মনছুর ও তার তিন সহযোগী। পরে দোকানের ক্যাশ থেকে তারা ৮০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় ফাঁকা গুলি ছোড়েন, যাতে কেউ এগিয়ে আসতে না পারে। এছাড়া ২১ অক্টোবর খুলশীর দুই নম্বর গেটের বেবী সুপার মার্কেট এলাকায় স্বর্ণ ছিনতাই ঘটনা এবং ৪ নভেম্বর রেলওয়ে হাসপাতাল কলোনির মনার টেঙি গ্যারেজে মো. ইলিয়াছ নামে একজনের ওপর গুলির ঘটনা ঘটে। এ দুটি ঘটনায়ও মনছুর জড়িত।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মো. তারেক আজিজ আজাদীকে বলেন, মনছুর ডাকাতকে খুলশী থানায় নিয়ে এসে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। মনছুর একজন পেশাদার ভাড়াটে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ডাকাত ও ছিনতাইকারী।
খুলশী থানা পুলিশ জানায়, ২০১৮ সালে মনছুরের স্ত্রী কোহিনুর বেগম অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছিল। ওই বছরের ৪ এপ্রিল পাহাড়তলী বাজারে একটি ডিমের আড়ত তথা রানা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা খুনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আসামিদের তালিকায় আছেন মনছুর ডাকাত। মূলত টাকা লুট করতে বাধা দেওয়ায় মাসুদ রানা খুন হয়েছিলেন। তখন অস্ত্র–গুলিসহ মনছুরকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। পরে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন।
পুলিশ কর্মকর্তা মো. তারেক আজিজ বলেন, মাসুদ রানা খুনের পর গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে বের হয়ে আসেন মনছুর। এরপর আবার জড়িয়ে পড়েন অপরাধে। বর্তমানে মাসুদ হত্যা মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। মনছুরের বিরুদ্ধে নগরী ও দেশের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৬টি মামলা রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সকল ঘটনা স্বীকার করেছেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নগরীতে তিনি ভাড়ায় নিয়োজিত হয়ে ছাত্র–জনতার ওপর হামলা করেছিলেন বলেও জানিয়েছেন।