মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে বিএনপি মধ্যপ্রাচ্যে ষড়যন্ত্রের বৈঠক করছে বলে অভিযোগ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের মধ্যে পৃথিবী যখন স্তব্ধ, ভবিষ্যৎ নিয়ে মানুষ যখন শঙ্কিত ও প্রচণ্ডভাবে উদ্বিগ্ন সে সময়ে তারা জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্রের বৈঠক করে বেড়াচ্ছে। সেটার বহি:প্রকাশ হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের বৈঠক। যা প্রচণ্ড নিন্দনীয়।
শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে মধ্যপ্রাচ্য পাকিস্তনি গোয়েন্দা সংস্থার সাথে বৈঠক করছে বিএনপি। গণমাধ্যমে আসা সংবাদটি আওয়ামী লীগ কিভাবে দেখছে?
আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির রাজনীতি ষড়যন্ত্রের উপর প্রতিষ্ঠিত। তারা বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে ক্রমাগতভাবে ষড়যন্ত্রের পথই বেছে নিয়েছে। পাকিস্তানি গোয়েন্দা ও গোয়েন্দা সংস্থার সাথে তাদের যে দহরম-মহরম বা সংশ্লিষ্টতা সেটা বহু পুরনো।
হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৯১ সালের নির্বাচনের আগে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে বিএনপিকে ৫ কোটি টাকা দেয়া হয়েছিল। এটি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক প্রধান আদালতে জবানবন্দিতে বলেছেন। সুতরাং তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, তাদের এ ষড়যন্ত্র শুধু নির্বাচন নয়, নির্বাচন আরো অনেক দেরি আছে। নির্বাচনের বাকি আরো সাড়ে তিন বছর রয়েছে।
‘ষড়যন্ত্র’র পথ পরিহারে বিএনপির প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো, তারা যেন ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করে। তারা অতীতে ষড়যন্ত্রের পথ অবলম্বন করে এগুতে পারেনি সেটা নিশ্চই তারা অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছে। না হয় আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের মানুষ পরপর তিনবার রায় দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় বসাতো না। ষড়যন্ত্র করে কোন লাভ হবে না।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৪ সেপেস্টম্বর) ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কদের বলেছিলেন, ‘বিএনপি এবং সাম্প্রদায়িক অপশক্তি একটি বিদেশি সংস্থা গোপনে বৈঠক করে বাংলাদেশে সরকার পতনের ষড়যন্ত্র করছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ এসেছে। তারা বিদেশে বসে সরকার পতনের জন্য ষড়যন্ত্র করে, আবার দেশে নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা বলে।’
এদিকে ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়ার আগে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে ‘মোহাম্মদ আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার, দৈনিক আজাদী এবং গণতন্ত্র’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। স্বাধীন সংবাদপত্র পাঠক সমিতি এ সেমিনারের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, উদ্বোধক ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মো. মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী।
বক্তব্য রাখেন দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহছানুল হায়দর চৌধুরী বাবুল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ, স্বাধীন সংবাদপত্র পাঠক সমিতির উপদেষ্টা লায়ন এম.এ সামাদ খান, সেমিনার উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর চৌধুরী, দৈনিক আজাদী পরিচালনা সম্পাদক ওয়াহিদ মালেক, হাফেজ আমান উল্লাহ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাধীন সংবাদপত্র পাঠক সমিতির সভাপতি এস এম জামাল উদ্দিন। সঞ্চালনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন।
সেমিনারে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দৈনিক আজাদী পত্রিকা স্বাধীনতার পূর্বে বাঙালি জাতীয়তাবোধকে ধারণ করে এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় ও পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রকাশিত হয়ে আসছে। সেজন্য দৈনিক আজাদী পত্রিকা নিশ্চয়ই সমাজে এবং রাষ্ট্রে ধন্যবাদ পাওয়ার অধিকার রাখে। এজন্য দৈনিক আজাদী পত্রিকা পরিবারকে আমিও ধন্যবাদ জানাই। তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন,বাংলাদেশের বহুল প্রচারিত পত্রিকাগুলোর একটি আজাদী। ঢাকার অনেক পত্রিকার চেয়েও আজাদীর সার্কুলেশন বেশি। এই কৃতিত্ব প্রথমত ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক সাহেবের, তিনি দূরদৃষ্টি নিয়ে এই পত্রিকা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, অত্যন্ত গৌরব ও সফলতার সাথে ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দৈনিক আজাদী চালু আছে। বাংলাদেশের বহুল প্রচারিত পত্রিকাগুলোর একটি আজাদী। ঢাকার অনেক পত্রিকার চেয়েও আজাদীর সার্কুলেশন বেশি। এই কৃতিত্ব প্রথমত ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক সাহেবের, তিনি দূরদৃষ্টি নিয়ে এই পত্রিকা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।