ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমে সফল হতে চাই

বিভাগীয় পর্যায়ে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ধর্ম উপদেষ্টা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৩ অক্টোবর, ২০২৫ at ৮:০৭ পূর্বাহ্ণ

সবাই মিলে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন সফল করার পাশাপাশি মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টিতে প্রচারণা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। তিনি বলেন, ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমে আমরা সফল হতে চাই। সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, গাভি, ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায় টাইফয়েডের যে টিকাটি দেয়া হচ্ছে তা ইসলামী শরিয়ত মতে মানব শরীরের জন্য শতভাগ হালাল ও বৈধ, হারামের কোনো সংমিশ্রণ নেই। কোনো কিছু মনে করারও নেই। মানব শরীরের জন্য এটি অত্যন্ত উপযোগী। শরীরের ক্ষতি করবে এ রকম কোনো উপাদানও এ টিকাতে নেই। টিকাটি নেয়ার পর সামান্য জ্বর ও ব্যথা হতে পারে। তবে ভয়ের কিছুই নেই। এই টিকা গ্রহণের মাধ্যমে আমরা দেশকে টাইফয়েডমুক্ত করতে পারব। গতকাল রোববার সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে বিভাগীয় পর্যায়ে আয়োজিত টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন (টিসিভি) ২০২৫এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. সেখ ফজলে রাব্বির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ক্যাম্পেইনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন, ধর্ম উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার একান্ত সচিব ড. মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের পরিচালক (স্থানীয় সরকার) মনোয়ারা বেগম, রেঞ্জ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. তারেকুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. মো. ফরহাদ হাসেন, পরিচালক (হাসপাতাল অ্যান্ড ক্লিনিকসমূহ) ডা. আবু হোসাইন মো. মইনুল আহসান, ইউনিসেফের চিফ অব ফিল্ড মাধুরী ব্যানার্জী ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিভাগীয় সমন্বয়কারী ডা. ইমং প্রু চৌধুরী। আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমে পৃথিবীর বহু দেশ এগিয়ে গেছে। আমরা পিছিয়ে আছি। আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা ছোটকালে দেখেছি, ঘাতক ব্যাধি টাইফয়েডের কারণে মানুষ অন্ধ ও বিকলাঙ্গ হওয়ার পাশাপাশি শারীরিক অন্যান্য জটিলতা দেখা দেয়। এ দেশসহ সারা পৃথিবী থেকে করোনার মতো মরণব্যাধি কোভিড১৯ নির্মূল হয়েছে। এরপরেও শুধু আমার দেশ নয়, বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিনেশন বা টিকা কার্যক্রম নিয়ে অজ্ঞাত কারণে ভুল বোঝাবুঝি বা বিরূপ সমালোচনা আছে। আমাদের দেশে ফেসবুকেও আমরা নানা ধরনের কথা দেখতে পাই। এর পেছনে একটি কারণও আছে। বহু বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি ঘটনা ঘটেছে। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্বীকার করে না।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ১০ কোটি টাকার ইনফ্লুয়েঞ্জা ও মেনিনজাইটিসের টিকা আমরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হাজি সাহেবদেরকে দিয়েছি। মুসলিম দেশে টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে একটি নেতিবাচক প্রচারণা আছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ও মেনিনজাইটিসের টিকা না দিলে সৌদি আরবে ঢুকতে দেয়া হয় না। গত বছর এক লাখ হাজিকে আমরা বিনামূল্যে ইনফ্লুয়েঞ্জা ও মেনিনজাইটিসের টিকা ও সনদ দিয়ে সৌদি আরবে হজে পাঠিয়েছি। আগামী বছর আরো এক লক্ষ মানুষকে হজে নেব। ভ্যাকসিনেশন নিয়ে সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ধর্ম মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে আমরা একযোগে কাজ করছি।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিভাগের মোট ৪৩ হাজার ৬১২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১ হাজার ২৮১টি স্থায়ী কেন্দ্র, ২৩ হাজার ৭৭৬টি আউটরিচ কেন্দ্রে মোট ৯৭ লাখ ৬৩ হাজার ৬৪১ জন শিশুকে টাইফয়েড টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে স্কুল পর্যায়ে ৬৪ লাখ ৮৫ হাজার ৪৩৫ জন ও কমিউনিটি পর্যায়ে ৩২ লাখ ৭৮ হাজার ২০৬ জন শিশু।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআজ আবু মোহাম্মদ তবিবুল আলমের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী
পরবর্তী নিবন্ধপ্রধান উপদেষ্টা রোম পৌঁছেছেন