ভোটের পর বিএনপির প্রথম কর্মসূচি

গ্রেপ্তার আতংক থাকলেও চট্টগ্রামে সফল করতে চান নেতারা

মোরশেদ তালুকদার | শনিবার , ২৭ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৮:১০ পূর্বাহ্ণ

গ্রেপ্তার ‘আতংক’ থাকলেও ভোটের পর প্রথম কর্মসূচি ‘কালো পতাকা মিছিল’ চট্টগ্রামে সফল করতে চায় বিএনপি। এ কর্মসূচিতে বড় জমায়েত ঘটাতে চান দলটির চট্টগ্রামের নেতারা। আজ বিকেলে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এ মিছিল শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। বিষয়টি সিএমপি’কে অবগত করা হয়েছে। কেন্দ্র থেকে এ কর্মসূচিতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানকে অতিথি করে দেয়া হয়।

বিএনপি’র একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, হরতালঅবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করেও সরকারের পদত্যাগে এক দফা দাবি আদায়ে ব্যর্থ হয় বিএনপি। বরং গত প্রায় তিন মাসে নগরের বিভিন্ন থানায় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৩০টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আটক হয়েছেন প্রায় এক হাজার নেতাকর্মী। এছাড়া বহু নেতাকর্মী জামিন নিতে না পারায় আত্মগোপনে আছেন। সবমিলিয়ে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা কিছুটা ‘হতাশ’। তাদের মনোবল চাঙা করতে কেন্দ্র ঘোষিত প্রথম কর্মসূচি তাই বড় জমায়েতের মধ্য দিয়ে সফল করতে চান তারা। তবে এক্ষেত্রে গ্রেপ্তার আতংকে থাকা তূণমূল কর্মীদের উপস্থিতি নিয়ে কিছুটা চিন্তিত শীর্ষ নেতারা।

জানা গেছে, গত রোববার বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সারা দেশে দুইদিনের কালো পতাকা মিছিল ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি ও অবৈধ সংসদ বাতিলের এক দফা দাবি’তে কালো পতাকা মিছিল করা হবে’।

জানা গেছে, গত বছরের ১২ জুলাই সরকারের পদত্যাগে এক দফা দাবি ঘোষণা করে বিএনপি। এ দাবি আদায়ে নানা কর্মসূচিও পালন করে। এরপর গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসাবেশের আয়োজন করে। সেদিন আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ায় পণ্ড হয় সমাবেশ। এরপর ২৯ অক্টোবর সারা দেশে সকালসন্ধ্যা হরতাল পালন করে দলটি। এটি ছিল দীর্ঘ সাড়ে ৮ বছর পর ডাকা বিএনপির হরতাল। হরতালের পর ৩০ অক্টোবর থেকে গত ডিসেম্বের মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত কয়েক ধাপে অবরোধহরতাল কর্মসূচি পালন করে দলটি। সর্বশেষ ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে ২০ ডিসেম্বর অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়া হয়। এতেও দাবি আদায়ে ব্যর্থ হয় বিএনপি। এছাড়া ভোটের দিন হরতাল কর্মসূচি পালন করে। এর মধ্যে ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়। ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।

এদিকে কিছুদিন চুপ থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। ঘোষণা অনুযায়ী, গতকাল শুক্রবার জেলা সদরে এবং আজ শনিবার মহানগরে এ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেন তিনি। তবে চট্টগ্রামে জেলা সদরে গতকাল কর্মসূচি পালিত হয়নি। আজ নগরে অনুষ্ঠেয় কর্মসূচি যৌথভাবে পালন করবে নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি। এতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

জানা গেছে, গত ২৩ জানুয়ারি সিএমপি’তে নগর বিএনপির পক্ষ থেকে কালো পতাকা মিছিলের বিষয়ে অবগত করে একটি চিঠি দেয়া হয়। এতে বলা হয়, নূর আহমেদ সড়ক, জুবিলি রোড হয়ে নিউ মার্কেট চত্ত্বর পর্যন্ত কালো পতাকা মিছিল করা হবে। তবে সিএমপির পক্ষ থেকে তিন পোলের মাথা পর্যন্ত মিছিল করতে বলা হয়েছে।

নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন আজাদীকে বলেন, কর্মসূচি সফল করতে আমরা প্রস্তুতি সভা করেছি। প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে আমাদের নেতাকর্মীরা কর্মসূচিতে যোগ দিবেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মামলা হলেও অনেক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারে ওয়ারেন্ট হয়নি। কাজেই ওয়ারেন্ট ছাড়া তো গ্রেপ্তারের নিয়ম নেই। তাই নেতাকর্মীরা অবশ্যই কর্মসূচিতে আসবেন। যাদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট আছে হয়তো তারা আসবেন না।

গতকাল কর্মসূচি পালন না করা প্রসঙ্গে দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান আজাদীকে বলেন, যেহেতু নজরুল ইসলাম খান আসছেন তাই কেন্দ্র থেকেই একসঙ্গে পালন করার জন্য ঠিক করে দেয়া হয়েছে। দক্ষিণ জেলার প্রতিটি উপজেলা ও পৌরসভা থেকে আমাদের নেতাকর্র্মীরা যোগ দিবেন কর্মসূচিতে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরোজায় নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার আশ্বাস বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর
পরবর্তী নিবন্ধদলের সমর্থন পেতে মরিয়া আওয়ামী লীগের অর্ধডজন প্রার্থী