ভোটার তালিকা হালনাগাদে সকল প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী প্রতি বছরের ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ শুরু হয়। এরপর মার্চের ২ তারিখ সারাদেশে এক সাথে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করে থাকে নির্বাচন কমিশন। এতোদিন নির্বাচন কমিশন না থাকায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয় বাড়িবাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। গতকাল সরকারের সাবেক সচিব এএমএম নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এ কমিশনের অধীনেই হবে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
গতকাল বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ নতুন কমিশন নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করেন। এ কমিশনে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সাবেক অতিরিক্ত সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমানেল মাসুদ, সাবেক যুগ্ম সচিব বেগম তহমিদা আহমদ এবং অবসরারপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগ হলেই যেন কাজ শুরু করতে কোনো অসুবিধা না হয়, সে জন্য আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. এনামুল হক আজাদীকে বলেন, হালনাগাদ ভোটার তালিকা কার্যক্রমের প্রস্তুতি আমরা নিয়ে রেখেছি। কমিশনের নির্দেশনা পেলেই যাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নতুন ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। ভোটার তালিকা হালনাগাদের সিদ্ধান্ত কমিশন থেকে দেয়া হয়। তারপর আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করি। আমরা আমাদের প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। মাঠপর্যায়ে কার্যালয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য কি পরিমাণ সরঞ্জাম আছে, কি পরিমাণ লাগবে এর হিসাব চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। হালনাগাদ কার্যক্রমে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয় ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত। মার্চের ২ তারিখ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হয়ে থাকে।
প্রতি বছরই এই সময়ের মধ্যে নতুন তরুণ ভোটাররা হালনাগাদ ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকেন। হালনাগাদ ভোটার তালিকায় প্রথমবারের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য নতুন ভোটাররা অপেক্ষায় থাকেন। যারা বয়সের দিক দিয়ে ভোটার হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন তারা সকলেই এই সময়ের মধ্যে ভোটার হয়ে থাকেন।
সর্বশেষ ভোটার তালিকা অনুযায়ী, চট্টগ্রাম মহানগরী ও জেলার মোট ভোটার সংখ্যা ৬৫ লাখ ৭৬ হাজার ৯২৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৩৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫৮৩ জন এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা ৩১ লাখ ১৩ হাজার ২৮১ জন। এবার তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার হয়েছে ৬১ জন। নির্বাচন কমিশন থেকে জানা গেছে, সর্বশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী, দেশে ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার ১৬০ জন। তবে হালনাগাদ কার্যক্রমের বাইরেও অনেকে ভোটার হয়েছেন। এক্ষেত্রে বর্তমানে প্রকৃত ভোটার সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।