আমার ছেলের বড় শখ ছিলো একটি সাইকেল কিনবে। সেই সাইকেলে করে নিয়মিত নানার বাড়িতে বেড়াতে যাবে। অনেক কষ্ট করে সাইকেল কেনার জন্য টাকাও যোগাড় করেছিলাম। কিন্তু সাইকেল কেনা আর হলো না।
সাইকেল চালানোর স্বাদ মিটাতে পারলো না। সাইকেলে করে নানার বাড়ি যাওয়া হলো না। সাইকেলের পেছনে বোনদের নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারলো না। এর আগেই আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গেছে আমার বুকের ধন। আমার ছেলে আর কোন দিন ফিরে আসবে না। ছেলের মুখে মা ডাক আর শুনতে পারবো না। ছেলের লাশের পাশে বসে বিলাপ করতে করতে এসব কথা বলছিলেন সাতকানিয়ার নলুয়া ইউনিয়নে নির্বাচনী সহিংসতায় দায়ের কোপে নিহত শিশু মো. তাসিফ উদ্দিনের মা. ছকিনা বেগম।
অশ্রুভেজা কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার ছেলে এখনো ছোট, ভোটার হয়নি। ভোটের উৎসব দেখার জন্য সেখানে গিয়েছিল। তারা কেন আমার ছেলেকে এভাবে হত্যা করলো? আমি বাবা বলে এখন কাকে জড়িয়ে ধরবো। এসব কথা বলতে বলতে বার বার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিলেন ছকিনা বেগম। কোন শান্তনাই তার কান্না থামাতে পারছে না।
এ সময় ঘরের এক কোণায় বসে কাঁদছিলেন নিহত তাসিফের দাদা নুরুল ইসলাম। কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, তাসিফ ছিল আমার হাতের লাঠি। সবসময় আমার আশপাশে থাকতো। সাথে মসজিদে নিয়ে যেতো। ওজু করার পানি এনে দিত। নাতির কাছ থেকে এসব সেবা পেয়ে খুব আনন্দ লাগত। এখনতো আমি নাতিকে হারিয়ে ফেলেছি। তাসিফকে ছেড়ে আমি কিভাবে থাকবো?