ভেজাল সয়াবিন তেল উৎপাদন ও নানা প্রতারণা

সিলগালা দুটি কারখানার একটিকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা, আরেকটির সবাই গেল পালিয়ে

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৯ জানুয়ারি, ২০২২ at ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ

সয়াবিন তেল রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের আদলে ত্রিবেণী ও নূর তেল বোতলজাত, রাঁধুনির ফরম্যাট ব্যবহার করে হুবহু রাঁধুনি নামের তেল বাজারজাতসহ নানা ধরনের প্রতারণা, ভেজাল পণ্য উৎপাদন এবং বিপণনের দায়ে দুটি ভোজ্যতেল কারখানা সিলগালা করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি কারখানাকে জরিমানা করা হয়েছে তিন লাখ টাকা। অপর কারখানার মালিকসহ সংশ্লিষ্টরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদেরকে আজ বুধবার শুনানিতে উপস্থিত হওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
কারখানা দুটি থেকে বিপুল পরিমাণ ভেজাল পণ্য জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কেমিক্যাল মিশিয়ে পাম অয়েলকে সোয়াবিন তেলে পরিণত করা এবং বিভিন্ন দামি ব্র্যান্ডের আদল দিয়ে বাজারজাত করে আসছিল কারখানা দুটি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বায়েজিদ থানাধীন জে সি প্যাকেজিং অ্যান্ড মার্কেটিং নামের একটি কোম্পানির হাজিপাড়া ও নয়াহাট এলাকায় কারখানা দুটিতে অভিযান পরিচালনা করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। একটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতেই অভিযানটি পরিচালিত হয় বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। অভিযানকালে দেখা যায়, ভিন্ন নামে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে অবৈধভাবে এস এস অয়েল ট্রেডিং এবং মেসার্স মিজান এন্টারপ্রাইজ নামে সয়াবিন ও সরিষার তেল প্রক্রিয়াজাতকরণ, উৎপাদন ও বিপণন করে আসছিল।
কারখানা দুটিতে নানা ধরনের প্রতারণা এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে ওঠার মতো বিভিন্ন ঘটনা ধরা পড়ে। এ সময় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের বিভিন্ন ধারা লংঘনের ঘটনায় তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ দিদার হোসেন ও সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আনিছুর রহমান অভিযানে নেতৃত্ব দেন।
অভিযানকালে দেখা যায়, খোলা পাম অয়েলে জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কেমিক্যাল মিশিয়ে নূর, ত্রিবেণী, রাঁধুনি, মাইশা প্রভৃতি ব্র্যান্ডের তেল প্রক্রিয়াজাতকরণ, উৎপাদন ও বিপণন করা হতো। তৈরি করা হতো সরিষার তেল। এসব ভেজাল পণ্য নগরীর বিভিন্ন স্থানে দোকানে সরবরাহ করা হতো। অস্বাস্থ্যকর, অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা পরিবেশে চলত এসব তেল বোতলজাতসহ নানা প্রক্রিয়া। অগ্নিনির্বাপণের কোনো ব্যবস্থাও ছিল না। কারখানার ভেতরে বিপুল পরিমাণ দাহ্য প্লাস্টিকের বোতল গুদামজাত করে রাখা হলেও আগুন নিভানোর ব্যবস্থা ছিল না। কারখানা দুটি থেকে প্রতিদিন চার থেকে সাত লাখ টাকার ভোজ্যতেল বাজারজাত হতো বলে প্রমাণ মিলেছে।
অভিযানকালে বিপুল পরিমাণ তেলের বোতল, প্রায় ৫ হাজার নকল বা অনুমোদনহীন লেবেল জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া কেমিক্যাল, ট্যাংক, নানা ধরনের পণ্য জব্দ করা হয়।
অভিযানকালে বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন নয়ারহাট এলাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউ সড়কে এস এস অয়েল ট্রেডিংয়ের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। অভিযানের খবর পেয়ে তারা গা ঢাকা দেয়। কারখানা মালিকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে নোটিশ ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। আজ তাদের শুনানিতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
অপর প্রতিষ্ঠান বায়েজিদ থানাধীন ওয়াজেদিয়ার হাজিপাড়ার মেসার্স মিজান এন্টারপ্রাইজকে বিভিন্ন ধারা লংঘনের অপরাধে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠান থেকে জব্দকৃত বিপুল পরিমাণ মালামাল ধ্বংস করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআহলা-করলডেঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত
পরবর্তী নিবন্ধসিআরবি অবরুদ্ধ করার ষড়যন্ত্র চলছে