জীবন ধারণাবদি মানবগণ ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগতভাবে ভৌতিক বা নৈতিক কারণ জনিত রোগ সমূহে কবলিত হচ্ছে। প্রকৃতির নিয়মে চললে ওষুধ সমূহের প্রয়োজন কম হতো। সরলভাবে জীবন যাপন করায় রোগ অল্পই হতো। বর্তমানে দেশে ইউনানী, এলোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি, কবিরাজী, হামদর্দ বা হারবাল বায়োকেমিক চিকিৎসা পদ্ধতি প্রচলিত আছে। প্রত্যেক ওষুধ প্রস্তুতকারক ও ওষুধ তৈরি কারখানা আছে। বর্তমানে বহু ওষুধ এইসমস্ত কারখানা থেকে বিদেশে রপ্তানি হয়। দেশের সর্বস্তরের মানুষ ওষুধ সেবন করেন। ওষুধ সমূহে যদি আটা, ময়দা, সুজি ও চিনি মিশ্রণে ভেজাল ওষুধ তৈরি করা হয়, তা কি করে ভালো ওষুধ হতে পারে!
আমাদের দেশে ভেজাল ও নকল ঔষধের বিস্তার আজ জনস্বাস্থ্যের জন্য এক ভয়ঙ্কর সংকট রূপে দেখা দিচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সকল মহলের শুভ চিন্তা, চেতনা, ধ্যান ও ধারণা থাকা কর্তব্য হয়ে পড়েছে। শহর, বন্দর, গ্রামে–গঞ্জে ভেজাল ও নকল ওষুধ সেবন করতে গিয়ে মারাত্মক ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে যুক্তরাষ্ট্র, নাইজেরিয়া, ভারত ও পাকিস্তানেও ভেজালের ঘটনা ঘটেছিল। তাঁরা হুঁশিয়ার হয়ে গেছে। আমাদের দেশে ২০২৩ সালের আইন অনুসারে ভেজাল ওষুধ তৈরির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। আইন প্রণয়ন করে সমস্যার সমাধান হবে না। স্বেচ্ছায় দেশ প্রেমিকের মনোভাব নিয়ে স্ব–স্ব দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করা প্রয়োজন।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক তার দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। কেমিস্টগণ কোন ঔষধে কী মিশ্রণ করতে হবে তা পরামর্শ দেবেন। কর্তব্য পরায়ণ কর্মকর্তা কর্মচারীগণ নিজ নিজ কর্তব্য পালনে যত্নশীল হবেন।
চিকিৎসকের মহৎ এবং একমাত্র উদ্দেশ্য রোগীকে সঠিক ওষুধ প্রদান ও পরামর্শ দিয়ে পুনরায় সুস্বাস্থ্যে আনয়ন করে নিরোগ করা। অচিরে, নিরুপদ্রবে, স্থায়ীভাবে, স্বাস্থ্যের পুনঃপ্রবর্তন অথবা সর্বাপেক্ষা সরল বিশ্বাসযোগ্য অনিষ্ট বিহীন প্রথায় এবং সম্পূর্ণভাবে দূরীকরণ আরোগ্যের সর্বোচ্চ আদর্শ।
বর্তমানে বলতে গেলে প্রায় অভিজ্ঞ ও খ্যাতনামা চিকিৎসকগণ প্যাথলজির রিপোর্ট পর্যবেক্ষণ করে ওষুধ নির্বাচন করেন। মেশিনগুলো সঠিক রিপোর্ট তৈরিতে সাহায্য না করলে আর যিনি রিপোর্ট প্রস্তুতকারক, তিনি যদি দায়িত্ববান ও যত্নশীল না হন ভুল চিকিৎসা হতে পারে। সেই সাথে ওষুধ তৈরির কারখানার পরিবেশ অবশ্যই পরিষ্কার রাখা দরকার।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অবশ্যই নীতি নির্ধারণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। যে কোনও রাষ্ট্রের ন্যূনতম মানবিক দায়িত্ব হচ্ছে নাগরিক যেন সুচিকিৎসা পায় তার ব্যবস্থা করা।