মীরসরাই ইকোনমিক জোন প্রকল্পের সাড়ে তিন একর জমির দলিলপত্র জাল-জালিয়াতি করে অধিগ্রহণের আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ চেষ্টার অভিযোগে শাহ আলম নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে জেলা প্রশাসন।
তিনি ফেনী জেলার সোনাগাজী থানার চরসোনাপুর এলাকার মো. রহিমুল্লাহর ছেলে। গতকাল দুপুরে এলএ শাখার (ভূমি অধিগ্রহণ শাখা) সার্ভেয়ার, অফিস সহকারী ও এলএও সহ সবাই মিলে হাতেনাতে জালিয়াত চক্রের সাথে জড়িত এ যুবককে আটক করে। পরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় কোতোয়ালী থানায় তাকে সোপর্দ করা হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মাসুদ কামাল আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শাহ আলম নামের ওই যুবক আমমোক্তার নিযুক্ত না হয়েও নিজেকে আমমোক্তার দাবি করেন এবং জাল-জালিয়াতি করে দলিলও সৃজন করেন। একপর্যায়ে আজকে (গতকাল) এসে অধিগ্রহণের টাকা পেতে আবেদন করেন। সন্দেহ হলে তার সম্পর্কে খোঁজ খবর নেয়া হয় এবং জমির প্রকৃত মালিকদের সাথে কথা বলি। তারা জানান, অধিগ্রহণের টাকা পেতে তারা কাউকে আমমোক্তার নিযুক্ত করেননি। মাসুদ কামাল বলেন, দুই ব্যক্তির সহযোগী শাহ আলম এ সব জাল-জালিয়াতি করেছেন। তাদেরকেও খুঁজে বের করা হবে এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এলএ শাখা সূত্র জানায়, এলএ মামলা নম্বর ১৩/১৭-১৮, বিএস খতিয়ান নম্বর ৩৬৭, বিএস দাগ নম্বর ১০৮৭ম, মৌজা – দক্ষিণ মঘাদিয়া সংশ্লিষ্ট উক্ত জমির প্রকৃত রেকর্ডীয় মালিক খায়রুল বশর। মৃত্যুকালে তিনি জাহান রীনা, সাইফুল ইসলাম, শামসুর নাহারসহ মোট ৫ জন ওয়ারিশ রেখে যান। এদের সাথে কোনোভাবেই আটক শাহ আলমের সম্পর্ক নেই। জিজ্ঞাসাবাদে তিনিই সংশ্লিষ্টদের এ কথা জানিয়েছেন। যদিও প্রথমদিকে তিনি রেকর্ডীয় মালিকের ওয়ারিশদের আমমোক্তার নিযুক্ত ব্যক্তি বলে দাবি করেছিলেন। বলেছেন, ওয়ারিশরা দেশের বাইরে থাকেন। তাই তাকে আমমোক্তার নিযুক্ত করেছেন।
এলএ শাখা সূত্র আরো জানায়, শাহ আলমের কাছ থেকে অধিগ্রহণের টাকা উত্তোলনের আবেদন পেয়ে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা ও সার্ভেয়ার আমমোক্তার নিযুক্ত বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত হতে যাচাই বাছাই কার্যক্রম সম্পাদন করেন। যাচাই বাছায়ের পর আমমোক্তার দলিলটি সন্দেহজনক প্রতীয়মান হলে তারা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (এলএ) বিষয়টি অবহিত করেন। একপর্যায়ে এলএ’র নির্দেশে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য গ্রহণকালে আমমোক্তার নিযুক্ত সংক্রান্ত বিষয়ের সত্যতা মেলেনি। দলিলটি জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে সৃজিত হয়েছে মর্মে সংশ্লিষ্টরা দাবি করেন।