ভূমধ্যসাগরে ১৩০ জন শরণার্থী নিয়ে একটি রাবারের নৌকা উল্টে গেছে। উল্টে যাওয়া নৌকার কাছ থেকে ভাসমান অবস্থায় অন্তত ১০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানায় ফ্রান্সের দাতব্য সংস্থা এসওএস মেডিটেরানি। প্রায় ৪০ জন শরণার্থী নিয়ে আরো একটি কাঠের নৌকা ভূমধ্যসাগরে এখনো নিখোঁজ রয়েছে বলে গতকাল শুক্রবার জানিয়েছে ফরাসি সংস্থাটি।
গত বুধবার ‘দ্য সিভিল হটলাইন এলার্ম ফোন’ থেকে এক প্রতিবেদনে ভূমধ্যসাগরে তিনটি নৌকা নিখোঁজ হওয়ার কথা জানানো হয়। তারপর এসওএস মেডিটেরানি সমুদ্রে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। এসওএস থেকে জানানো হয়, বর্তমানে ভূমধ্যসাগর খুবই উত্তাল হয়ে আছে এবং ছয় মিটারের বেশি উঁচু ঢেউ দেখা যাচ্ছে। খবর বিডিনিউজের।
লিবিয়ার ত্রিপলি থেকে উত্তরপূর্বে আন্তর্জাতিক জলসীমায় এসওএসর নিজস্ব জাহাজ ‘ওশান ভাইকিং’ উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। তিনটি বাণিজ্যিক জাহাজ সেটিকে সাহায্য করছে বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এসওএস মেডিটেরানি জানায়, প্রথমে বাণিজ্যিক জাহাজ ‘মাই রোজ’ সমুদ্রের পানিতে তিনটি মৃতদেহ খুঁজে পায়। তারপরই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত সংস্থা ‘ফ্রন্টেঙ’ উল্টে যাওয়া রাবারের নৌকাটি খুঁজে পায়। ওশান ভাইকিং ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর সমুদ্র থেকে ১০টি মৃতদেহ উদ্ধার করে। কিন্তু সেখানে কাউকে জীবিত খুঁজে পাওয়া যায়নি। সংস্থাটির টুইটার পেজে সমুদ্রে উল্টে থাকা কালো রঙের রাবারের নৌকাটির একটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে। নিখোঁজ তৃতীয় নৌকাটির বিষয়ে তারা এখনো কোনো তথ্য পায়নি বলেও জানান সংস্থাটির একজন মুখপাত্র। দারিদ্রতা এবং যুদ্ধ থেকে পালিয়ে উন্নত জীবনের আশায় লিবিয়া হয়ে প্রচুর শরণার্থী প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট নৌকায় ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করে। বিপদসঙ্কুল ওই পথ পাড়ি দিতে গিয়ে বহু শরণার্থী সমুদ্রে ডুবে মারা যায়। এ বছরও ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে সাড়ে তিনশ’র বেশি শরণার্থী মারা গেছে বলে জানায় এসওএস মেডিটেরানি।
সংস্থাটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযানে সহযোগিতার দায়িত্ব থেকে বিভিন্ন দেশ হাত ধুয়ে নিয়েছে। তাদের সরে যাওয়ার ফলে যে প্রাণঘাতী শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে সেটা পূরণের দায়িত্ব ব্যক্তিগত উদ্যোগ এবং নাগরিক সমাজের উপর পড়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (আইওএম) তথ্যানুযায়ী, গত বছর ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে দুই হাজার ২শর বেশি শরণার্থী সমুদ্রে প্রাণ হারিয়েছেন। গত মার্চে আইওএমর ওই প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। বলা হয়, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা সম্ভবত এর থেকেও অনেক বেশি।