ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে ভূজপুর থানার দাঁতমারা ইউনিয়নের হেয়াকোঁ বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষের জন্য বিএনপি ও আওয়ামী লীগ একে অপরকে দায়ী করেছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, উত্তর জেলা বিএনপি নেতা সরোয়ার আলমগীরের সমর্থক নেতাকর্মীরা প্রায় দুইশ মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে হেয়াকোঁ চৌধুরী পাড়ায় বিএনপি নেতা কামাল চৌধুরীর বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। তাদের গাড়িবহর হেয়াকোঁ বাজারে পৌঁছলে সেখানে অবস্থানরত আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় আওয়ামী লীগ কর্মীরা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। এ সময় হেয়াকোঁ–ফটিকছড়ি সড়ক ও ফেনী–খাগড়াছড়ি সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আতংকিত যাত্রী ও সাধারণ মানুষ এদিক–ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। এক পর্যায়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা পিছু হটে নারায়ণহাট এলাকায় গিয়ে অবস্থান নেন।
দাঁতমারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য সেলিম সরকার বলেন, বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় হেয়াকোঁ বাজারের মোড়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে আপত্তিকর স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। উভয় পক্ষকে অনুরোধ করে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে বিএনপির নেতাকর্মীরা শক্তি সঞ্চয় করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর পাল্টা হামলা করে। এতে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হানিফ সরকার ও বনানী কলেজ ছাত্রলীগ নেতা আলমগীর গুরুতর আহত হন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামী লীগের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা তাদেরকে ধাওয়া দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ভূজপুর থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক একরামুল হক বলেন, হেয়াকোঁতে কামাল চৌধুরীর বাড়িতে দাওয়াতে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অন্তত দেড় শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এছাড়া বেশ কিছু গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে।
ভূজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন ফারুকী বলেন, বিএনপি নেতা সরোয়ার আলমগীর কয়েকশ মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে হেয়াকোঁতে একটি দাওয়াতে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তিনি বলেন, বিএনপি নেতা সরোয়ার আলমগীর এতগুলো গাড়ির বহর নিয়ে আসার বিষয়টি পুলিশকে আগে থেকে অবহিত করেননি।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হেয়াকোঁ বাজারে অবস্থান নিয়ে মিছিল করছিলেন। আর বিএনপির নেতাকর্মীরা কিছু দূরে নারায়ণহাট গিয়ে অবস্থান নেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।