ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী
এটি বিশ্ব–সর্বজনস্বীকৃত যে; উন্নত–উন্নয়নশীল–অনুন্নত–উন্নয়ন সহযোগী দেশ, আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা–আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সকলের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের অত্যন্ত চমৎকার–ভারসাম্যপূর্ণ কূটনৈতিক–অর্থনৈতিক সুসম্পর্ক বিরাজিত। বিগত এক দশকের অধিক সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার অনুপম নেতৃত্বে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বরাজনীতি–আর্থসামাজিক ব্যবস্থায় উঁচুমার্গে সমাসীন। অর্থনৈতিক–সামাজিক–মানবিক উন্নয়ন সূচকসহ সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ অদম্য উন্নয়ন অগ্রগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আজ একটি উন্নয়নশীল এবং উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছেও বাংলাদেশ এখন গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে বিবেচিত। স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির হার–শিল্প উন্নয়নসহ সার্বিক অর্থনৈতিক বিকাশ, রাজনৈতিক পরিপক্কতা সর্বোপরি ভৌগলিক অবস্থানের কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ অধিকমাত্রায় সমাদৃত। অতিসম্প্রতি ব্রিকস–জি ২০’র মতো দুইটি বৃহৎ সম্মেলনে বাংলাদেশের যোগদান ও সাইডলাইনে বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধানদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক এবং রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী–ফান্সের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর ভূ–রাজনীতিতে বাংলাদেশের নবতর অবস্থানের উন্মেষ ঘটিয়েছে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর একটি যুগান্তকারী ঘটনা। বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে এর ব্যাপক প্রভাব বিস্তারের সমূহসম্ভাবনা রয়েছে। নির্বাচনের মাত্র ২–৩ মাস পূর্বে ইউরোপের প্রভাবশালী নেতার এই সফর ভূ–রাজনৈতিক অঙ্গণে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলাদেশ সরকারের প্রতি তাদের আস্থা অতিশয় দৃশ্যমান। ফ্রান্স জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য বিধায় ম্যাক্রোঁর সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানের প্রশংসাও দেশ–সরকারের জন্য অতীব গুরুত্ব বহন করে।
খ্যাতিমান আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশ্লেষকদের মতানুসারে, বাংলাদেশ আঞ্চলিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র ভারত ও উন্নয়ন অংশীদার চীনের সঙ্গে নিবিড় সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলছে। ভারত ও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সমধিক সুসম্পর্ক স্থাপিত হওয়ার বিশিষ্ট কারণসমূহের মধ্যে রয়েছে বহুমাত্রিক বৈদেশিক নীতি, আঞ্চলিক সংযোগের উপর জোর প্রদান, অর্থনৈতিক অংশীদারদের বৈচিত্র্য আনার প্রচেষ্টা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ইতিবাচক যোগফল। ভারত ও চীনের সঙ্গে সম্পর্কের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে বাংলাদেশের সক্ষমতা একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন যা সম্ভবত এই অঞ্চলের ভবিষ্যত গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে। সম্পর্কের এই দৃঢ়তা বাংলাদেশকে আঞ্চলিক শক্তিমান দেশসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো বৈশ্বিক পরাশক্তিগুলোর সঙ্গেও তর্ক–বিতর্কের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। তাই এসব দেশের কাছে বাংলাদেশের মর্যাদা ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এই দেশগুলোর অব্যাহত হস্তক্ষেপের কারণ বৈশ্বিক রাজনীতিতে বাংলাদেশের অসাধারণ প্রয়োজনীয়তা।
সমসাময়িক সময়ে ভূ–রাজনীতি পর্যবেক্ষণ–পর্যালোচনায় এটি সুস্পষ্ট যে, নয়াদিল্লি–ওয়াশিংটন–টোকিও–বেইজিং–মস্কো ও আঙ্কারাসহ বিশ্বের সকল রাষ্ট্রসমূহ দুটি কারণে বাংলাদশেকে তাদের কাছে টানার অবিরাম চেষ্টা চালাচ্ছে। প্রথমটি হচ্ছে যার যার বৈশ্বিক জোটে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করা। যেমন ইন্দো–প্যাসিফিক কৌশলে ওয়াশিংটন–টোকিও ঢাকাকে চায়। অন্যদিকে চীন বেল্ট অ্যান্ড রোড বাস্তবায়ন প্রকল্পেও বাংলাদেশের অবস্থান নিবড়ি প্রত্যাশিত। যদিও বাংলাদেশ নিজের স্বার্থ বিবেচনায় এবং ব্যালেন্স কৌশল নিয়ে কোনো পক্ষকেই ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ কিছুই সুস্পষ্ট করেনি। চীনের প্রকল্পে অর্থনৈতিক উন্নয়নের বাইরে কোনো সামরিক উপাদান না থাকলেও বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক সুসংহত হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ওয়াশিংটনকে কোন ধরনের সামরিক উপাদানের সঙ্গে যুক্ত না হয়ে ইন্দো–প্যাসিফিক কৌশলের অর্থনৈতিক ইস্যুতে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইন্দো–প্যাসিফিক ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান চূড়ান্তভাবে জানান দিতে বাংলাদেশও কৌশলপত্র প্রস্তুত করছে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে অস্ত্র বিক্রয়। দেশের সার্বভৌম পরিধির নিরাপত্তায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ঘোষিত ফোর্সেস গোল–২০৩০ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীকে যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ–অঞ্চল থেকে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ক্রয় করছে বিধায় সব দেশই চাইছে বাংলাদেশের কাছে অস্ত্র বিক্রি করতে।
সচেতন মহলসহ দেশের আপামর জনগণ সম্যক অবগত আছেন, বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের ভূ–রাজনৈতিক গুরুত্বের মূল নিয়ামক হচ্ছে এর ভৌগলিক অবস্থান। এই অবস্থানের কারণেই বাংলাদেশের সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার মধ্যে একটি সেতুবন্ধন নির্মিত হয়েছে। ভূ–রাজনীতি বিবেচনায় বাংলাদেশ বর্তমান বৈশ্বিক রাজনীতিতে বেশ মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে সমাসীন। বিশ্বরাজনীতির অন্যতম শক্তিমান দেশ চীন ও আঞ্চলিক শক্তি প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ভৌগলিক নৈকট্য এবং দক্ষিণ এশিয়াসহ এ অঞ্চলে উল্লেখ্য দুই দেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাংলাদেশ বিষয়ে আলোচনায় নতুন মাত্রিকতা প্রকাশ পেয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অন্যান্য ক্ষমতাধর দেশের নিকট বাংলাদেশ বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে। বিজ্ঞজনের মতে, ‘ভূ–রাজনীতিতে বিভিন্ন দিক থেকে বাংলাদেশ নিজেদের সক্ষমতা সুদৃঢ় করতে পেরেছে। বঙ্গোপসাগর, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের নেতৃত্ব, ল্যান্ডলক দেশ নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন, চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে বিশ্বের পশ্চিম প্রান্তের সংযোগ ঘটানো, ১৬ কোটি মানুষের বাজার, অদম্য অর্থনৈতিক উত্থান, তৈরি পোশাক খাতের বহুমুখী উৎপাদন ও অগ্রগতি, জলবায়ুর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে নেতৃত্ব দেওয়া– এসব কারণে বাংলাদেশ ভূ–রাজনীতিতে অতিশয় তাৎপর্যপূর্ণ অবস্থানে অধিষ্ঠিত। এর সঙ্গে করোনা টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা বাংলাদেশকে বিশ্বের পাওয়ার প্লেয়ারদের সঙ্গে দরকষাকষিতে বাড়তি গুরুত্ব যোগ করেছে।’
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক গবেষকদের মতে, বঙ্গোপসাগরের ভূ–রাজনৈতিক গুরুত্বেই মূলত বাংলাদেশের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে– দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে বঙ্গোপসাগরের বিশেষ ভূমিকা, চীনের অন্যতম বাণিজ্যিক পথ মালাক্কা প্রণালিতে মার্কিন ও তার মিত্রদের শক্ত অবস্থানের জন্য বঙ্গোপসাগরের দিকে চীনের নজর, চীনকে আটকানোর জন্য বঙ্গোপসাগরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের প্রয়োজনীয়তা, ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের সাথে বঙ্গোপসাগরের সংযোগ, বাংলাদেশ চীনের খুব কাছাকাছি হওয়ায় এখানে মার্কিন উপস্থিতি, ভারতকে চাপে রাখতে মার্কিন প্রশাসনের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব বেড়ে যাওয়া, ভারতের সেভেন সিস্টার্স রাজ্যের সাথে বাণিজ্য সহজ করতে এ অঞ্চলের ভূমিকা, বাংলাদেশ চীনের বেল্ট রোড অ্যান্ড ইনিশিয়েটিভ পরিকল্পনার অংশ হওয়া, দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার মধ্যবর্তী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার রাজনীতি–অর্থনীতি–ব্যবসা–বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ রয়েছে বিধায় ইউরোপ–আমেরিকাসহ বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর দৃষ্টি বাংলাদেশের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ।
বাংলাদেশ বর্তমান ভূ–রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি সামুদ্রিক ও বাণিজ্য দেশ হিসেবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ায় নিজের অবস্থানকে সুদৃঢ় করতে পরিপূর্ণ সক্ষম হয়েছে। ইতোমধ্যে চীন, ভারত, জাপান, সৌদিআরব, সংযুক্ত আরব–আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীদের গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশের নাম উচ্চারিত। এসব দেশের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশকে তাদের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে আছে চীন। ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ গণমাধ্যমে প্রকাশিত যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী অর্থনীতি ও রাজনীতি বিষয়ক সাময়ীকি দি ইকোনমিষ্টের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘ইকোনমিষ্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআরইইউ)’ এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনেও বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার বিষয়টি উপস্থাপিত হয়েছে। উক্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৪০ সালের মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ ২০টি দেশের অর্থনীতির একটি হবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বাজারের আকার, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সম্ভাবনাময় কিছু খাতের উপর ভিত্তি করে ইআরইইউ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের বিনিয়োগকারীদের জন্য পছন্দের গন্তব্য হচ্ছে বাংলাদেশ। সংস্থাটির তৈরিকৃত চীনের বিনিয়োগকারীদের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম। ২০১৩ সালে এই অবস্থান ছিল ৫২তম।
মূলত ভূ–রাজনৈতিক বিচারে বাংলাদেশের অন্যতম মিত্র দেশ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২০১৬ সালে বাংলাদেশে আসার পর কৌশলগত সম্পর্ক জোরদারের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বৃহৎ অবকাঠামো নির্মাণে চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়। ২১ আগস্ট ২০২৩ গণমাধ্যমে প্রকাশিত বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), মার্কিন থিংকট্যাংক প্রতিষ্ঠান আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউট (এইআই) ও চীনা বিভিন্ন সূত্রের তথ্যানুসারে, ২০০৫ থেকে জুন ২০২৩ পর্যন্ত ১৮ বছরে চীন বাংলাদেশে ৭০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছে। তন্মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ এসেছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে, যার পরিমাণ ৩২৭ কোটি ডলার। ধাতু (নির্মাণসংশ্লিষ্ট) সরবরাহ খাতে দেশটির বিনিয়োগের পরিমাণ ২১৩ কোটি ডলার। এছাড়াও পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে বিনিয়োগ ১১০ কোটি, আর্থিক খাতে ১৬ কোটি ও অন্যান্য খাতে ৪১ কোটি ডলার বিনিয়োগ রয়েছে দেশটির। সর্বশেষ ২০২২ সালের জুন মাসে দেশের জ্বালানি খাতে ১৭ কোটি ডলার বিনিয়োগ করে চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না জেনারেল টেকনোলজি। একই বছরের জানুয়ারি মাসে পরিবহন ও জ্বালানি খাতে যথাক্রমে ২৪ ও ১২ কোটি ডলারের দুটি বিনিয়োগ এসেছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনা বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ একটি আদর্শ ও নিরাপদ জায়গা। বাংলাদেশ সরকার অবকাঠামো, আইসিটি, সড়ক যোগাযোগ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণে পরিবেশ তৈরি করে দিচ্ছে। বাংলাদেশের এই উদ্যোগ চীনা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে বলেও মনে করেন তারা।
বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরকে যথাযথভাবে ব্যবহার করে ইন্দো–প্যাসিফিক অর্থনৈতিক করিডোরের একটি ‘হাবে’ বা কেন্দ্রে পরিণত হয়ে দক্ষিণ এশিয়া থেকে শুরু করে এশিয়া, দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া ও চীনসহ অন্যান্য দেশের মধ্যে যোগাযোগে অনন্য অবদান রাখতে পূর্ণাঙ্গ সার্থক হবে। মুক্তির মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক ও মহান মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী চেতনায় ঋদ্ধ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সাহসীক নেতৃত্বে লালসবুজের বাংলাদেশ ভূ–রাজনীতিতে অপরাজেয় থেকে বিশ্বপরিমন্ডলে অনন্য মর্যাদায় সমাসীন হওয়ার উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। গণতান্ত্রিক–অসাম্প্রদায়িক–মানবিক মূল্যবোধে উদ্ভাসিত লালসবুজ পতাকার স্বাধীন–সার্বভৌম বাংলাদেশের সাথে উন্নত–উন্নয়নশীল বিশ্বের সম্পর্ক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপনে নবতর অধ্যায় নির্মিত হবেই – এটিই প্রত্যাশিত।
লেখক : শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়