বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে পণ্য খালাসের চেষ্টার ঘটনায় আমদানিকারক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত সিঅ্যান্ডএফ প্রতিনিধিকে আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। গতকাল কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (এআরও) সুজয় দেবনাথ বাদী হয়ে নগরীর বন্দর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার সিয়াম এন্টারপ্রাইজের মালিক এবং সিঅ্যান্ডএফ প্রতিনিধি চট্টগ্রামের খান এন্টারপ্রাইজের মালিককে মামলায় আসামি করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২২ (২) ও ২৩ (২) এবং দণ্ডবিধির ৪২০, ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারায় মামলাটি দায়ের হয়েছে।
উল্লেখ্য, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে জালিয়াতির মাধ্যমে পণ্য খালাসের চেষ্টা করে ঢাকার চকবাজারের মেসার্স সিয়াম এন্টারপ্রাইজ। প্রতিষ্ঠানটি মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স পারমিট (সিপি) নিতে www.mincomgov.com নামের ভুয়া ওয়েবসাইটটি খুলেন। প্রকৃতপক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট হচ্ছে- www.mincom.gov.bd। গত ১১ অক্টোবর সিয়াম এন্টারপ্রাইজ চট্টগ্রাম কাস্টমসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সিপি দাখিল করে। একইসাথে ১৩ অক্টোবর এ সংক্রান্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠিও দাখিল করে প্রতিষ্ঠানটি। এতে বিএসটিআই-এর ছাড়পত্র এবং কাস্টমসের আরোপিত জরিমানা ও শুল্ক পরিশোধ সাপেক্ষে চালানটি ছাড় দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সিপি এবং চিঠি নিয়ে প্রথম থেকে সন্দেহপোষণ করে কাস্টমস কর্তারা। পরবর্তীতে যাচাই বাছাই শেষে ভুয়া চিঠি এবং ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরির বিষয়টি নিশ্চিত হয় কর্মকর্তারা। অভিযুক্ত সিয়াম এন্টারপ্রাইজ চলতি বছরের শুরুর দিকে ১৩ হাজার ৫২০ কেজি চীনা বাদাম ও ৪ হাজার ৫১০ কেজি জলপাই আমদানির ঘোষণায় একটি চালান আমদানি করে। আমদানিকারকের মনোনীত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট নগরীর আগ্রাবাদ বাদামতলীর খান এন্টারপ্রাইজ চালানটি খালাসের জন্য ২৩ এপ্রিল কাস্টমসে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। কিন্তু গোপন সংবাদে সন্দেহজনক পণ্যের উপস্থিতির তথ্য থাকায় কাস্টমসের এআরআই শাখা চালানটির খালাস স্থগিত করে শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করেন। পরীক্ষায় ২১ হাজার ৬০ কেজি শিশুখাদ্য গুঁড়োদুধ পাওয়া যায়। ঘোষণা বর্হিভূত পণ্য আমদানি করায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমদানিকাকে ৬৬ লাখ টাকা ব্যক্তিগত ও ১০ লাখ টাকা বিমোচন জরিমানা দেওয়া আদেশ দেয়। আমদানি পণ্যের চালানটি খালাসের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বা আমদানি রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের সিপি কাস্টমসে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।