সত্য–বস্তুনিষ্ঠ পর্যালোচনায় এটি সুস্পষ্ট যে, মার্কিন ভিসানীতি শুধু বাংলাদেশ নয়; বিশ্বব্যাপী নতুন এক কৌতুহল নির্মাণ করেছে। ভিসানীতি বিশ্লেষণে যেটুকু অনুধাবন করা যায়, এটি কোন পক্ষের অনুকূলে বা প্রতিকূলে উপস্থাপিত নয়। বরং উক্ত ভিসানীতি কার্যকারিতায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারের নির্বাচন প্রতিশ্রুতির প্রাধান্য পেয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের যে অঙ্গীকার সরকার–নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ব্যক্ত করা হচ্ছে; তারই পরিপূর্ণ প্রতিফলন চাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বাংলাদেশের নির্বাচনকে নিয়ে কতিপয় উন্নত দেশের অধিকমাত্রায় ব্যতিব্যস্ত হওয়ার কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা সচেতন মহল উপলব্ধি করতে পারছেন না। গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, অতিসম্প্রতি মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে প্রেস ব্রিফিংকালে খোদ মার্কিন সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল, শুধু বাংলাদেশের জন্য কেন ভিসানীতি কার্যকর হবে? প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের কর্মপন্থা অবলম্বন কোন দুরভিসন্ধিমূলক–সরকার পরিবর্তনে নিজস্ব স্বার্থ–এজেন্ডা বাস্তবায়নে কদর্য পদক্ষেপ–দেশি বিদেশি চক্রান্তের যোগসাজশ বলে বিপুল জনশ্রুতি রয়েছে। ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ মতে, বাংলাদেশে র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রদানে প্রধান ভূমিকা পালনকারী যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাধর ব্যক্তিটি ঘুষ গ্রহণের দায়ে অভিযুক্ত এবং পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন।
সম্প্রতি ব্রিকস, জি ২০ সম্মেলন–রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সফরসহ নিকট অতীতে জাতিসংঘের অধিবেশন চলাকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কূটনৈতিক বিচক্ষণতায় বিষয়সমূহ অনেকটুকু বিজ্ঞমহলের বোধগম্য হয়েছে। দেশবাসীও বাঙালি জাতিরাষ্ট্রের সার্বিক কল্যাণে গণতান্ত্রিক ধারায় অবাধ–সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার কাঠামোর পালাবদল প্রত্যাশী। জনগণের কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়েই সম্ভবত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনগণের শক্তিকেই ক্ষমতায় আরোহণ–সরকার গঠন প্রক্রিয়ায় মুখ্য নিয়ামক হিসেবে পুনর্ব্যক্ত করেছেন। দেশের পবিত্র সংবিধানের মৌলিক বৈশিষ্ট হচ্ছে জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক। সম্মানিত ভোটারদের অবারিত ভোট প্রদানের অধিকার প্রয়োগ করে সার্থক নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন কমিশনই যথাযথ ভূমিকা পালন করবে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর পরই সরকার কাঠামো অপরিবর্তিত থাকলেও মূলত নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন কমিশনই সংবিধান সম্মত সকল উদ্যোগ গ্রহণে প্রত্যাশিত দৃঢ়চেতা মনোভাবের পরিচয় দেবেন। উল্লেখ্য ব্যবস্থায় বর্তমান সরকারের নির্বাচন কমিশনকে যথার্থ–প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান ব্যতিরেকে গুরুত্বপূর্ণ কোনো ভূমিকা অনিবার্য নয়। আবেগতাড়িত–কল্পনাপ্রসূত–শুধুমাত্র বিরোধীতার কারণে কোন ধরনের অসাংবিধানিক সরকারের প্রতিস্থাপন যেকোন ধরনের সমর্থন পরিপন্থি।
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে জানায়, আজ থেকে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাদানকারী ব্যক্তিদের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ২৪ সেপ্টেম্বর বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর আওতায় সরকারি দল, বিরোধী দল ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কথা এসেছে। আগামীতে গণমাধ্যমও ভিসানীতিতে যুক্ত হবে।’ উল্লেখ্য যে, ২৪ মে ২০২৩ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের ধারা ২১২/ (এ)(৩)(সি) (“৩সি”) এর অধীনে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যেকোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির জন্য ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপে সক্ষম হবে। বর্তমান ও প্রাক্তন বাংলাদেশি কর্মকর্তা–কর্মচারী থেকে শুরু করে সরকারপন্থি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
দেশরত্ন শেখ হাসিনা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যে বক্তব্য– প্রস্তাবনা দেশে–বিদেশে উপস্থাপন করেছেন তার প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে; পবিত্র সংবিধানের আলোকে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশনই সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগে পক্ষপাতশুন্য অবাধ–সুষ্ঠু–নিরপেক্ষ নির্বাচনে বিভিন্ন দল–জনগণের স্বতঃম্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে সর্বমহলে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেবে। জনগণের রায়কে সর্বাধিক প্রাধান্য দিয়েই সরকার পরিবর্তনে তার অবিচল সমর্থন–আস্থা তিনি বারংবার ব্যক্ত করেছেন। ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের জাতিসংঘ স্থায়ী মিশনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে ভয় পাওয়া কিংবা ঘাবড়ানোর কিছু নেই বলে মন্তব্য করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি কার্যকরের ঘোষণার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সম্মানিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা খুব খুশি। ভিসানীতি নিয়ে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) আমাদের বলেছে, আমরা যে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চাই, সেটা যেন সত্যিকারের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়। যারা নির্বাচনে বাধা দেবে তাদের উপর যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি প্রয়োগ করবে। আশাকরি ভিসানীতির ফলে কেউ নির্বাচনে বাধা দেবে না।’ ২৩ সেপ্টেম্বর কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার অবৈধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করতে সক্ষম। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের উপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞায় আমরা উদ্বিগ্ন নই। যুক্তরাষ্ট্র একটি গণতান্ত্রিক দেশ, আমরাও তাই। বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে তারা অবশ্যই অন্যদের উপর ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে। তবে আমরা এ নিয়ে চিন্তিত নই। আমরা জানি কীভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হয়।’
বাংলাদেশের নির্বাচন ঘিরে মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে মনগড়া অভিব্যক্তি প্রচারণা করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার যে অপচেষ্টা অব্যাহত ছিল; উচুমার্গের নীতি নৈতিকতায় পরিপুষ্ট সরকারের নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ এতসব জঘন্য প্রচারণাকে নির্মূল করতে ভিসানীতিও প্রচন্ড সহায়ক হয়েছে বলে জনগণের মতো আমারও দৃঢ় বিশ্বাস। সকল পক্ষ থেকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি উল্লেখিত ভিসানীতি দেখে ঘুম হারাম হওয়ার যেসব অবাঞ্চিত বক্তব্য উচ্চারিত হচ্ছে ইতিমধ্যেই প্রকাশিত ভিসানীতি সে ধরনের কোনো ইঙ্গিত বহন করে না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নয়; জঙ্গিবাদ–মৌলবাদ–সন্ত্রাস নির্মূলে শতভাগ সফল ও সার্থক সরকারের অধীনেই নির্বাচন কমিশনের প্রত্যক্ষ পরিচালনায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে বৈশ্বিক কোন ধারণা–প্রভাব বিস্তারের বহিঃপ্রকাশ এ পর্যন্ত দৃশ্যমান হয়নি। অধিকন্তু যারা নির্বাচন বানচাল করার জন্য অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি–ভোটারদের অংশগ্রহণে বাধা–দলীয় সমাবেশে প্রতিবন্ধকতা–ভোটে কারচুপি ইত্যাদি বিষয়ে সহিংসতা সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচালের অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে; বিদেশী পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যয়ই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মার্কিন ভিসানীতিতে জোরালোভাবেই প্রতিফলিত। কোন দল বা ব্যক্তি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করল কি করল না, তা কোনভাবে বিবেচ্য নয় বরং এটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে অগ্রগণ্য।
যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন ভিসানীতিকে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকার স্বাগত জানিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণা করা ভিসানীতি যথেচ্ছভাবে প্রয়োগের পরিবর্তে বস্তুনিষ্ঠতার সাথে অনুসরণ করার আশাবাদ ব্যক্ত হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণাটিকে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সকল পর্যায়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের দ্ব্যর্থহীন প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করছে। বাংলাদেশের জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও ভোটাধিকারের ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন। জনগণের রায়কে উপেক্ষা করে ভোট কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী কোনো সরকার টিকে থাকার নজির বাংলাদেশে নেই। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা বিঘ্নিত করার উদ্দেশ্যে কোনো ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠীর যেকোনো অবৈধ অপচেষ্টা বা কুৎসিত হস্তক্ষেপ প্রতিরোধ ও মোকাবেলা করার জন্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সামগ্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া কঠোর নজরদারির আওতায় রাখা হবে এবং এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক স্বীকৃত আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদেরও অংশগ্রহণ থাকবে। সরকার আশা করে জাতীয় পর্যায়ে যেসব অগণতান্ত্রিক শক্তি সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসযজ্ঞের আশ্রয় নেয় তারা সতর্ক থাকবে এবং সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার অপতৎপরতা থেকে বিরত থাকবে।
সামগ্রিক পর্যালোচনায় এটি অনুভূত যে, মার্কিন ভিসানীতি কাউকে সমর্থন–বিরোধীতার জন্যই প্রণিধানযোগ্য নয়। সকল প্রকার অবৈধ–অনৈতিক অপরাজনীতির প্রচলিত সহিংস–পরশ্রীকাতর–ধ্বংসাত্মক ধারাকে সংহার করে জনগণের প্রকৃত অধিকার সুরক্ষায় অন্যন্যসাধারণ এক পরিবেশ–পরিস্থিতি তৈরি করবে। ইতোমধ্যে সুপ্রতিষ্ঠিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বা ভিসানীতি কোনো দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বা সরকারের পটপরিবর্তনে ন্যূনতম কোনো প্রভাব বিস্তারের প্রমাণ নেই। ইরাক–লিবিয়ার জনগণ এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার কুফল প্রতিনিয়তই টের পাচ্ছেন। তুরস্কের মত যেকোন রাষ্ট্রের জনপ্রিয় সরকার কখনো এই ধরনের জুজুর ভয়কে মোটেও পরোয়া না করে গভীর অবজ্ঞার দৃষ্টিতে অবলোকন করে। ব্যক্তির চেয়ে দল ও দলের চেয়ে রাষ্ট্র সমধিক প্রাধান্যের ভিতের অবিচল শক্তিমানতায় জনগণকে সকল ক্ষমতার উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুপম উপমা রূপে অভিষিক্ত হবেই– নিঃসন্দেহে এটুকু প্রত্যাশা করা মোটেও অমূলক নয়।
লেখক : শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়