ভিন্ন কৌশলে রাউজান বিএনপির বিবদমান দুই পক্ষ

আজ মানববন্ধন করবে গিয়াস কাদেরের অনুসারীরা খোন্দকার অনুসারীদের অপেক্ষা তদন্ত রিপোর্টের

রাউজান প্রতিনিধি | রবিবার , ৩ আগস্ট, ২০২৫ at ৮:১৯ পূর্বাহ্ণ

রাউজানের বিবদমান বিএনপি’র দুই গ্রুপের চলমান সংঘর্ষ সংঘাতের সর্বশেষ ঘটনায় ক্ষুব্ধ দলের কেন্দ্রীয় কমিটি ইস্যু করা নোটিশ মোকাবেলায় বিরোধে জড়িত দুই পক্ষই এখন ভিন্ন ভিন্ন কৌশলে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় থাকার চেষ্টায় আছেন। গত ২৯ জুলাই চট্টগ্রামরাঙামাটি সড়কের উপজেলার সর্তারঘাট এলাকায় গোলাম আকবর খোন্দকার গ্রুপ ও গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী গ্রুপের সংঘর্ষ সংঘাতের খবর পাওয়ার সাথে সাথে কেন্দ্র থেকে বিবাদমান দুই গ্রুপের নেতৃত্বদানকারী দুই নেতার সাংগঠনিক কর্মকান্ডের উপর প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে কতিপয় নির্দেশনা দিয়ে নোটিশ ইস্যু করেছিল। এক নোটিশে দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর পদ পদবি স্থগিত অপর নোটিশে দলের চেয়ারপার্সানের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম আকবর খোন্দকারের নেতৃত্বে থাকা চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির কমিটি বাতিল করে।

নোটিশ পাওয়ার পর গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী তার পদ পদবি বাতিলের নোটিশ অনভিপ্রেত, ভিত্তিহীন অভিযোগ করে তার উপর অন্যায় করা হয়েছে বলে দাবি করে আসছেন। তার অভিযোগ মিথ্যে তথ্যের উপর ভর করে পাঠানো নোটিশ তিনি প্রত্যাহার চান, নতুন তদন্ত কমিটি গঠনের দাবিও করেন তিনি। এই নেতার নামে ইস্যু করার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয় তার অনুসারীগণ। তারা কেন্দ্রের ওই নোটিশ প্রত্যাহারের দাবিতে রাউজানে নতুন নতুন কর্মসূচি নিয়ে ঘটনার পর থেকে সোচ্চার আছে। অনুসারীদের মধ্যে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ফিরোজ আহমদ বলেছেন, ২৯ জুলাইয়ের ঘটনার সাথে কোনোভাবেই গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর সম্পৃক্ততা ছিলনা। মিথ্যা তথ্যের উপর ভিত্তি করে নেতার পদ পদবি স্থগিত করা নোটিশটি পেয়ে তৃণমূলের সকল নেতাকর্মী হতাশ ক্ষুব্ধ। একারণে ত্যাগী নেতাকর্মীরা নেতার পদ পদবি স্থগিত করা নোটিশটি প্রত্যাহারের দাবিতে আজ ৩ আগস্ট রোববার সকাল থেকে রাউজানরাঙামাটি সড়কের সর্তারঘাট থেকে উপজেলার শেষ সীমানা ঢালারমুখ পর্যন্ত ১০ টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার জুড়ে মানববন্ধন করার কর্মসূচি নিয়েছেন।

অপরদিকে দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম আকবর খোন্দাকারের নেতৃত্বে থাকা নেতাকর্মীরা উত্তর জেলা বিএনপির কমিটি বাতিল করা নিয়ে তেমন একটা প্রতিক্রিয়া না দেখালেও তারা ২৯ জুলাই সত্তারঘাটে সংঘটিত সংঘর্ষের ঘটনায় নেতা গোলাম আকবর খোন্দকারকে প্রাণনাশের চেষ্টা চালিয়ে দাবি করে ওই ঘটনার জন্য গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর নিদেশ ও হামলার জন্য তার অনুসারীদের দায়ি করে আসছেন। এই দাবিতে স্বোচ্ছার আছেন ওই দিনের ঘটনায় আক্রান্ত গোলাম আকবর খোন্দকার নিজেও। খোন্দকার সমর্থিত উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন বলেছেন, রাউজানে গত এক বছরের কত মানুষ খুন হয়েছে, কতবার গুলিগোলা হয়েছে, কারা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিতে জড়িত এসব ঘটনা কেন্দ্র আগে থেকে অবগত। সর্বশেষ ঘটনার পর রাউজানের অরাজক পরিস্থিতির ঘটনা সমূহ উদঘাটনের জন্য কেন্দ্র থেকে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটি সাত দিনের মধ্যে তদন্ত রির্পোট জমা দেয়ার কথা রয়েছে। এই তদন্ত কমিটির প্রতি তাদের পূর্ণআস্থা থাকার কথা জানিয়ে এই নেতা বলেন রির্পোট জমা করা হলে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ রাউজানের অরাজক পরিস্থিতির জন্য কারা দায়ি তা জানতে পারবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রথমে জটলা সৃষ্টি, এরপর মোবাইল ও টাকা ছিনতাই
পরবর্তী নিবন্ধবন্ধু মানেই নতুন দিগন্ত