দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়ার বিজয় দিবসের ভাষণে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পশ্চিমা বিশ্বকে প্রলয় সংকেত পাঠাবেন বলে অনেকে যে ধারণা করেছিল তেমন কিছু হয়নি। সোমবার রাজধানী মস্কোর রেড স্কয়ারে বিজয় দিবসের প্যারেডে দেওয়া ভাষণে পুতিন বড় ধরনের কোনো ঘোষণা দেননি। বিজয় দিবসে মস্কোর সেন্ট পিটার্সবার্গ এবং দক্ষিণের রোস্তভ-অন-ডন শহরসহ রাশিয়াজুড়ে বিভিন্ন স্থানে বিমান মহড়ার পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাস সোমবার এ খবর জানিয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
ভাষণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণকে নায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, রাশিয়ার সীমান্তে ন্যাটো ও ইউক্রেন হুমকি তৈরি করছিল যা মস্কোর কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না’ বলে দাবি করেছেন। রাশিয়ার যোদ্ধারা এখন দেশের নিরাপত্তার জন্য লড়াই করছে বলেও দাবি করেন তিনি।
বলেন, আপনারা আপনাদের মাতৃভূমির জন্য লড়াই করছেন। প্রত্যেকটি সেনা ও কর্মকর্তার মৃত্যু আমাদের জন্য বেদনাদায়ক। তাদের পরিবারের দেখভালের জন্য রাষ্ট্র সবকিছু করবে। মহান বিজয় অর্জনের জন্য যুদ্ধে লড়ার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সাবেক সেনাদের অভিবাদন জানান তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অ্যাডলফ হিটলারের নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের জয়কে বিজয় দিবস হিসেবে পালন করে রাশিয়া।
৯ মে তে পুতিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ ঘোষণা কিংবা ইউক্রেন যুদ্ধে কোনও বিজয়ের ঘোষণা দিতে পারেন বলে পশ্চিমাদের যে জল্পনা ছিল, তাতে জল ঢেলেছেন তিনি। সেইসঙ্গে ইউক্রেনে হামলাকে বরাবরের মতোই বিশেষ সামরিক অভিযান বলেই পুতিন উল্লেখ করেছেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান দরকারি এবং সময়োচিত ছিল বলে দাবি করেছেন তিনি। এটি একটি স্বাধীন, শক্তিশালী, সার্বভৌম রাষ্ট্রের সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল বলে মন্তব্য করেন।
পুতিন বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ন্যাটো ও অন্য ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার উত্তেজনা চলছিল। রাশিয়া একটি ন্যায্য আপসের জন্য ইউরোপকে আহ্বান জানিয়েছিল, কিন্তু তারা আমাদের কথা শোনেনি। এরপর পুতিন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ও দানবাসে নিহত রাশিয়ার সেনাদের জন্য এক মিনিট নিরবতা পালনের আহ্বান জানান। তার ভাষণ শেষ হওয়ার পর মস্কোর ঐতিহাসিক রেড স্কয়ারে উপস্থিত কয়েক হাজার সেনা উল্লাস প্রকাশ করেন। এরপর কামান থেকে তোপ দাগানো ও রাশিয়ার জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়।