সামুদ্রিক ও মিঠা পানির মাছের সরবরাহ আগের চেয়ে কমে যাওয়ায় ভালো নেই ফিশারিঘাটের মাছ ব্যবসায়ীরা। এছাড়া সম্প্রতি ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবও পড়তে শুরু করেছে মাছের বাজারে। হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রতি ট্রিপ মাছ আহরণে ৫০ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, এবার ইলিশের ভর মৌসুমেও প্রত্যাশিত ইলিশ পাওয়া যায়নি। ইলিশ ছাড়াও মিঠা পানির মাছ আসার পরিমাণ কমে গেছে। করোনার প্রভাবে গত দেড় বছর ধরে নাকাল ছিলেন আড়তদাররা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও জেলেদের জালে পর্যাপ্ত মাছ আসছে না। সব মিলিয়ে গত দেড় বছরে ফিশারিঘাটে ব্যবসা কমে গেছে ৫০ শতাংশের মতো।
জানা গেছে, প্রতিদিন ভোরের আলো ফোটার আগে ফিশারিঘাটে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মাছ ব্যবসায়ীরা জড়ো হতে থাকেন। বেচাবিক্রি চলে সকাল ১০-১১টা পর্যন্ত। এ সময় ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখর থাকে পুরো এলাকা। তবে বেশ কয়েক মাস ধরে চিত্রটা কিছুটা পাল্টেছে। সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে চিংড়ি ও মিঠা পানির মাছের সরবরাহ কমে যাওয়ায় ব্যস্ততা আগের চেয়ে কমে গেছে।
কয়েকজন আড়তদার জানান, করোনার শুরু থেকে ব্যবসায়ীরা লোকসান দিয়ে আসছেন। করোনার ক্ষতি কাটাতে সম্প্রতি অনেকে ব্যাংক ঋণ নিয়ে নতুন করে বিনিয়োগ করছেন। কিন্তু এর মধ্যে ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাবে সাগর ও নদী থেকে মাছ আহরণ ও পরিবহনে খরচ বেড়ে গেছে। বর্তমানে ফিশারিঘাটে ১০৩টি গদি (আড়ত) আছে। সেখানে দুই শতাধিক ব্যবসায়ী এবং পাঁচ হাজার কর্মচারী আছেন। প্রতিদিন এখানে অন্তত ৩শ কোটি টাকা লেনদেন হতো।
সোনালী যান্ত্রিক মৎস্য শিল্প সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক বাবুল সরকার আজাদীকে বলেন, গত বছর যখন করোনা শুরু হয় তখন থেকে আমরা মাছ ব্যবসায়ীরা লোকসান দিয়ে আসছি। এখন করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও সাগর-নদী থেকে প্রত্যাশিত মাছ আহরণ হচ্ছে না। উল্টো ডিজেলের দাম বাড়ার কারণে মাছ আহরণ ও পরিবহনে খরচ বেড়ে গেছে। গত দেড় বছর টানা লোকসানের কারণে অনেক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের খরচটুকুও তুলতে পারছে না। ব্যবসা কমে যাওয়ায় অনেকে কর্মচারী কমিয়ে ফেলেছেন। কারণ ব্যবসা না হলেও খরচ কিন্তু থেমে নেই। তবে আমার কষ্ট হচ্ছে, করোনাকালীন সরকার অনেকগুলো খাতে ৪ শতাংশ সুদে প্রণোদনার ঋণ দিয়েছে। কিন্তু আমরা ছিলাম বঞ্চিত।