নারীদের দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবল শ্রেষ্টত্বের লড়াই সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। শিরোপা ধরে রাখার মিশনে এবারেও নেপাল গেছে বাংলার নারীরা। আর সেখানে নিজেদের প্রস্তুত করছেন সাবিনা–মারিয়ারা। নেপালে দ্বিতীয় দিনের অনুশীলনের সময় ও ভেন্যু একই ছিল। সকাল ৮টায় আনফা গ্রাউন্ডের টার্ফে যথারীতি রানিং, স্ট্রেচিং হলো। এরপর পিটার জেমস বাটলার নিজেদের মধ্যে আয়োজন করলেন ম্যাচ। সেখানেই ইঙ্গিত মিলল সম্ভাব্য সেরা একাদশের। যে একাদশ দিয়ে শিরোপা ধরে রাখতে চায় বাংলাদেশ দল। গতবারের সাফ জয়ী দলের তারকা ফরোয়ার্ড সিরাত জাহান স্বপ্না ও রক্ষণের নির্ভরতা আঁখি খাতুনের অবসরে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা নতুনদের দিয়ে পূরণ করতে চাইছেন বাংলাদেশ কোচ। রক্ষণে আঁখির জায়গায় আফিদা খন্দকারের খেলার সম্ভাবনাই বেশি। বাকি তিন ডিফেন্ডার হতে পারেন শিউলি আজিম, মাসুরা পারভীন ও শামসুন্নাহার সিনিয়র। রক্ষণের এই চারজন থাকবেন পোস্টের নিচে থাকা রূপনা চাকমাকে আগলে রাখার দায়িত্বে।
অনুশীলনে ব্যস্ত সময় কাটালেও রূপনাকে ছাপিয়ে যেতে পারছেন না ইয়ারজান বেগম ও মিলি আক্তার। গোলরক্ষক কোচ মাসুদ হোসেন উজ্জ্বলের দৃষ্টিতে দুজনের ‘রিফ্লেঙ’ রূপনার মতো নিখুঁত নয় এখনও। মানেটাও পরিস্কার, উইমেন’স সাফের মুকুট ধরে রাখার অভিযানে পোস্টের নিচে গত আসরের সেরা গোলরক্ষক রূপনাই মূল ভরসা। মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ এবং আক্রমণের সুর বেঁধে দেওয়ার ভার গতবার সামলেছিল মারিয়া মান্দা ও মনিকা চাকমা জুটি। এই দুজন রক্ষণ চেরা পাসে প্রতিটি ম্যাচেই আক্রমণভাগে বলের জোগান দিয়ে গেছেন বিরতিহীনভাবে। এই জুটি ‘বিচ্ছিন্ন’ হতে পারে এবার। মনিকা চাকমা, স্বপ্না রানীর কাঁধে উঠতে পারে মাঝমাঠ সামলানোর ভার। গত সাফের সর্বোচ্চ গোলদাতা ও সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতা সাবিনা খাতুনের ‘বিকল্প’ তৈরি হয়নি এখনও। যথারীতি এবারও তিনি আক্রমণভাগের প্রাণভোমরা। অবশ্য গত আসরে প্লে মেকারের ভূমিকাও অনেক ম্যাচেই নিয়েছিলেন সাবিনা। এবার তার সাথে আক্রমণভাগে তহুরা খাতুন, শামসুন্নাহার জুনিয়র ও ঋতুপর্ণাকে খেলাতে পারেন বাংলাদেশ কোচ।
গত সাফে চারটি করে গোল করা দুই ফরোয়ার্ড স্বপ্না ও কৃষ্ণা রানী সরকারের মধ্যে স্বপ্না অবসরে চলে গেছেন। পায়ের পাতার ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা কৃষ্ণা নেই সেরা ছন্দে। আক্রমণভাগে শুরুর একাদশে অভিজ্ঞদের সমাবেশ দেখা গেলেও সাগরিকার জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনাও আছে বেশ ভালোভাবেই। প্রস্তুতি শেষে এই ফরোয়ার্ড নিজেও বলেছেন, স্বপ্নার শূন্যতা পূরণে উন্মুখ হয়ে আছেন তিনি। এ দিনের প্রস্তুতিতে কোচের ভাবনা, পরিকল্পনা অনেকটাই পরিস্কার হয়ে গেছে খেলোয়াড়দের কাছেও। কৃষ্ণা যেমন বুঝে নিয়েছেন সেরা একাদশে তার থাকাটা এখন আর নিশ্চিত নয়। তিনি নিজেও বলেছেন, বদলি নামলেও সেরাটা নিংড়ে দিতে চেষ্টার ত্রুটি রাখবেন না। সব মিলিয়ে, বাটলার এখনও চূড়ান্ত না করলেও সেরা একাদশে জায়গা পাওয়ার লড়াই বেশ জমে উঠেছে দলের অন্দরে। গতকাল থেকে টুর্নামেন্ট শুরু হলেও বাংলাদেশ মাঠে নামবে আগামী শনিবার পাকিস্তানের বিপক্ষে। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচটি শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে। আর সে ম্যাচটি হবে আগামী ২৩ অক্টোবর।