ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে ভয়াবহ বার্ড ফ্লু। করোনা মহামারির মধ্যেই এই ফ্লু নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে মারা গেছে সাড়ে চার লাখের বেশি পাখি। ছয়টি রাজ্যে জারি করা হয়েছে সতর্কতা। দেশটির ন্যাশনাল ইনিস্টিটিউ অব হাই সিকিউরিটি অ্যানিমাল ডিজিজেস (এনআইএইচএসএডি) এ ইন্দোর ও মন্দসৌর থেকে আনা কিছু মৃত কাকের নমুনা পরীক্ষায় এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার ভাইরাস এইচ৫এন৮ এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা সূত্রে জানা যায়, গত ১০ দিনে ভারতজুড়ে হাজার হাজার পাখির মৃত্যু হয়েছে। ইতোমধ্যে একাধিক রাজ্য বার্ড ফ্লুর হানা নিশ্চিত করেছে। তা নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকারও। হাঁস-মুরগি ও কাক থেকে মানুষের দেহে যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়, তার জন্য প্রস্তুতি চলছে রাজ্যগুলোতে। খবর বাংলানিউজ ও বিডিনিউজের।
এখন পর্যন্ত কেরল, হিমাচল প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানেই বার্ড ফ্লুর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার শুধু কেরলেই ২৪ হাজারের কাছাকাছি হাঁস এবং অন্যান্য পাখি মারা গেছে। হিমাচল প্রদেশের ক্যাংরা শহর এলাকাই ২৭ হাজার রাজহ্বাস মারা গেছে। হরিয়ানার পঞ্চকুলায় জেলাতেই গত ১০ দিনে ৪ লাখ হাঁস-মুরগির মৃত্যু হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত বার্ড ফ্লুর হানার কথা নিশ্চিত করেনি সেখানকার সরকার। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তবে পশ্চিমবঙ্গে এখনও পর্যন্ত বার্ড ফ্লুর কোনও অস্তিত্ব মেলেনি বলে জানিয়েছে পত্রিকাটি। অন্যদিকে পশুপালন বিভাগের কয়েকটি সূত্রের তথ্যের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, মধ্যপ্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় কয়েকটি এলাকায় আকস্মিকভাবে প্রায় ৩৭৬টি কাকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ইন্দোরে ১৪২, মন্দসৌরে ১০০, আগার-মালওয়াতে ১১২, খারগোনে ১৩ ও সিহোরে ৯টি। মৃত কাকের নমুনা এনআইএইচএসএডি-ভোপালে পাঠানো হচ্ছে। রাজস্থানের নিকটবর্তী ইন্দোর ও মন্দসৌরে মৃত কিছু কাকের নমুনায় এইচ৫এন৮ শনাক্ত হয়েছে। ইন্দোরে একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করে র্যাপিড রেসপন্স টিমের মাধ্যমে কাকের আকস্মিক মৃত্যুর বিষয়ে পদক্ষেপনেওয়া হচ্ছে।
মধ্যপ্রদেশের সব জেলার পশুপালন বিভাগের কর্মকর্তাদের কাকের আকস্মিক মৃত্যুর বিষয়ে রাজ্য সরকারকে তাৎক্ষণিকভাবে জানানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি জেলা প্রশাসন ও সম্পর্কিত অন্যান্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে কাকদের নিয়ন্ত্রণ ও অসুস্থ কাকদের পৃথক করার পদক্ষেপ নেওয়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পোল্ট্রি খামার, বাজার, পুকুর ও জলাশয়গুলো বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। হ্রদ ও জলাশয়গুলোতে আশ্রয় নেওয়া পরিযায়ী পাখির নমুনা দ্রু পরীক্ষার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেসব এলাকায় বার্ড ফ্লুর সতর্কতা জারি হয়েছে, সেখানে হাঁস-মুরগি-ছাগলের মাংস, সব ধরনের মাছ, ডিম এবং অন্যান্য পোলট্রিজাত পণ্যের কেনাবেচা এবং সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।