ভারতের পিছিয়ে পড়া রাজ্যগুলোর অন্যতম বিহার। সেই বিহারের বাসিন্দা নিভা কুমারী। মাত্র ১৫ বছর বয়সে একটি বাইসাইকেল কীভাবে তার জীবনকে সহজ করে তুলেছিল সেই গল্পটাই তিনি বলেছেন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে। স্কুলে পড়াকালীন সময়ে টানা দুই বছর ধরে, সপ্তাহে ছয় দিন, তিনি রাজ্য সরকারের দেওয়া বাইসাইকেল ব্যবহার করে বাড়ি থেকে স্কুল, স্কুল থেকে কোচিং ক্লাস এবং দিনশেষে বাড়ি ফিরে আসতেন। এভাবে প্রতিদিন দুই ঘন্টা সাইকেল চালাতেন নিভা। খবর বিডিনিউজের।
আমার যদি সাইকেল না থাকত তবে আমার মনে হয় না যে আমি মাধ্যমিক শেষ করতে পারতাম। তাই সাইকেলই আমার জীবনকে সহজ করে দিয়েছে, বলেন ২৭ বছর বয়সী নিভা। বেগুসরাই জেলার এক কৃষকের মেয়ে নিভা। তার বাবা ১০ কিলোমিটার দূরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ানোর জন্য তাকে তার খালার কাছে থাকতে পাঠিয়েছিলেন।
সেই সময় মেয়েদের জন্য চলাফেরা বেশ কষ্টকর ছিল এবং গণপরিবহন তেমন নির্ভরযোগ্য ছিল না। এরপর নিভা যখন হাইস্কুলে ভর্তির জন্য বাড়ি ফিরে আসেন, তখন যাতায়াতের জন্য সাইকেলই তার একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়ায়। গ্রামের আঁকাবাঁকা রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন তিনি সাইকেল নিয়ে স্কুলে যেতেন। মেয়েরা যাতায়েতের জন্য নিয়মিত সাইকেল ব্যবহার শুরু করার পর থেকে অনেক আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে। তাই আগের তুলনায় এখন আরও বেশি সংখ্যক কিশোরীরা এখন স্কুলে যাচ্ছে। তাদের অধিকাংশেরই রাজ্য সরকারের দেওয়া সাইকেল আছে, বললেন বেগুসরাইয়ের স্বাস্থ্যকর্মী ভুবনেশ্বরী কুমারী। সমপ্রতি একদল গবেষক সায়েন্সডাইরেক্ট জার্নালে গ্রামীণ ভারতের স্কুলগামী শিশু এবং সাইকেল চালানো সম্পর্কে অসাধারণ একটি গবেষণা প্রকাশ করেছে। সৃষ্টি আগরওয়াল, অদিত শেঠ এবং রাহুল গোয়েলের গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতে সাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেছে গ্রামীণ মেয়েদের মধ্যে। ২০০৭ সালে ৪.৫% থেকে ২০১৭ সালে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে ১১% হয়েছে। এটি একটি নীরব বিপ্লব।