ভারতকে হোয়াইটওয়াশ, ইতিহাস গড়ল নিউজিল্যান্ড

স্পোর্টস ডেস্ক | সোমবার , ৪ নভেম্বর, ২০২৪ at ৯:১৯ পূর্বাহ্ণ

আগে দুই ম্যাচে জিতে ভারতের মাটিতে ভারতকে হারিয়ে সিরিজ জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। বাকি ছিল তাদের হোয়াইট ওয়াশ করা। শেষ পর্যন্ত সেটাও করল কিউইরা। আর তাতে যেন ইতিহাস গড়ল নিউজিল্যান্ড। একজন স্পিনার এজাজ প্যাটেল ধসিয়ে দিল ভারতকে। আর তাতে মাত্র ১৪৭ রান করতে পারলরনা ভারত। হারতে হয়েছে ২৫ রানে। আর সে ২৫ রানের স্মরণীয় জয় তুলে নিয়ে সিরিজটিও তাদের ক্রিকেট ইতিহাসে অবিস্মরণীয় করে রাখল কিউইরা। দেশের মাঠে তিন বা এর বেশি ম্যাচের টেস্ট সিরিজে প্রথমবার হোয়াইটওয়াশ হলো ভারত। ১১ উইকেট নিয়ে এই জয়ের নায়ক এজাজ প্যাটেল। প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়া বাঁহাতি স্পিনার দ্বিতীয় ইনিংসে শিকার করলেন ছয় উইকেট। টেস্ট ইতিহাসের তৃতীয় বোলার হিসেবে ইনিংসে ১০ উইকেটের সবকটি নিয়েছিলেন তিনি এই মাঠেই। ২০২১ সালে সেই ম্যাচে তিনি মোট ১৪ উইকেট নেওয়ার পরও হেরেছিল নিউজিল্যান্ড। এবার ১১ উইকেট নিয়ে ৩৬ বছর বয়সী স্পিনার দলকে এনে দিলেন মনে রাখার মতো জয়। তবে ম্যাচের শেষ ইনিংসে নিউজিল্যান্ড ও ইতিহাসের মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিলেন কেবল রিশভ পান্ত। ৫৭ বলে ৬৪ রান করে ভারতের কিপারব্যাটসম্যান বিদায় নেন এজাজের বলেই। এবারের আগে প্রায় ৭০ বছরে ১২ বারের ভারত সফরে কোনো সিরিজ জয় ছিল না নিউজিল্যান্ডের। আগের ৩৬ টেস্টে জয় ছিল মোটে দুটি। এই সফরে তারা পায়নি দলের সেরা ব্যাটসম্যান কেন উইলিয়ামসনকে। কদিন আগে তারা বাজেভাবে হেরে এসেছে শ্রীলঙ্কায় গিয়ে। সেই দলটিই এবার চমকে দিল গোটা ক্রিকেট বিশ্বকে। পুনে টেস্টে হেরে দেশের মাঠে ১২ বছর পর প্রথম সিরিজ হারল ভারত। পুনেতে নিউজিল্যান্ডের জয়ের নায়ক মিচেল স্যান্টনার মুম্বাইয়ে খেলতে পারেননি ইনজুরির কারণে। তার পরও ভারত হেরে গেল আবার। প্রথমবার তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইওয়াশড হলো তারা দেশের মাঠে। নিয়মিত অধিনায়ক হিসেবে টম ল্যাথামের যাত্রা শুরু হলো অভাবনীয় সাফল্যে। সাবেক পেসার সাইমন ডুল ধারাভাষ্যকক্ষে যথার্থই বললেন নিউজিল্যান্ডের টেস্ট ইতিহাসের সেরা সিরিজ জয়।

৯ উইকেটে ১৭১ রান নিয়ে গতকাল দিনের শুরু করে নিউজিল্যান্ড। মাত্র তিন রান যোগ করেই শেষ হয় তাদের ইনিংস। শেষ উইকেট নিয়ে ইনিংসে পাঁচ আর ম্যাচে ১০ উইকেট পূর্ণ করেন রাবিন্দ্রা জাদেজা। এই নিয়ে ১৫ বার তিনি পেলেন ইনিংসে পাঁচ উইকেট আর ম্যাচে ১০ উইকেট তৃতীয়বার। ভারতের সামনে লক্ষ্য তখন মাত্র ১৪৭ রানের। সে রান তাড়া করতে নেমে যদিও আগ্রাসী হওয়ার চেষ্টা করেন রোহিত শার্মা। সে অতি আগ্রাসন ডেকে আনে তার পতন। হেনরির অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ বল তুলে মারতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে ফিরেন তিনি ১১ রান করে। এরপর এজাজের ছোবলে ভারতের ব্যাটিং অর্ডার ভেঙে পড়ে তাসের ঘরের মতো। বল ছেড়ে দিয়ে বোল্ড হন শুভমান গিল। স্লিপে ড্যারিল মিচেলের দারুণ ক্যাচে ভিরাট কোহলি ফিরেন এক রানে। সিরিজের ছয় ইনিংসে রোহিত ও কোহলির প্রাপ্তি মাত্র একটি করে ফিফটি। এরপর এজাজের ফুল টসে ক্যাচ দিয়ে বসেন সারফারাজ খান। মাঝে ইয়াসাসভি জয়সওয়ালকে ফেরান গ্লেন ফিলিপস। ভারত ৫ উইকেট হারায় ২৯ রানে। এরপর প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন রিশভ পান্ত। ২১ রানে জীবন পাওয়া সেই পান্ত নিউজিল্যান্ডের হাত থেকে ম্যাচ বের করে নেওয়ার হুমকিই দিচ্ছিলেন। লাঞ্চের পর রিভিউ নিয়ে তাকে ফেরান এজাজ। পান্ত ফিরেন ৫৭ বলে ৬৪ রান করে। ভারতের জয়ের জন্য তখন প্রয়োজন ৪১ রান। ওয়াশিংটন সুন্দার ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন তখন ক্রিজে। যথেষ্ট ভালো ব্যাটসম্যান দুজনই। কিন্তু এই উইকেটে যে কাজটা কঠিন। অশ্বিন বিদায় নেন রিভার্স সুইপের চেষ্টায়। পরের বলেই দারুণ টার্নে আকাশ দিপকে বোল্ড করেন ফিলিপস। ম্যাচের শেষটা করলেন এজাজই। ভারতের শেষ ভরসা ওয়াশিংটন সুন্দরকে বোল্ড করে ম্যাচও শেষ করে দেন এই বাঁহাতি স্পিনার। কোনো রান যোগ না করেই শেষ তিন উইকেট হারায় ভারত। ম্যান অব দা ম্যাচ হয়েছেন এজাজ প্যাটেল। এই ম্যাচে জোড়া ফিফটি করা উইল ইয়াং জিতেন ম্যান অব দ্যা সিরিজের পুরস্কার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাংলাদেশের ওপেনাররা ব্যর্থ হচ্ছেন বলে স্বীকার করলেন জাকির
পরবর্তী নিবন্ধরিপনের সেঞ্চুরিতে চট্টগ্রামের সংগ্রহ ৩৭১ রান