ভারতকে হারিয়ে ইতিহাস নারী ক্রিকেট দলের

ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোমবার , ১৭ জুলাই, ২০২৩ at ৫:৫১ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বের নারী ক্রিকেটে অন্যতম সেরা পরাশক্তি ভারত। সেই ভারতকে হারিয়ে এবার আরেক ইতিহাস সৃষ্টি করল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। ভারতের বিপক্ষে টিটোয়েন্টি ক্রিকেটে একাধিক ম্যাচ জিতেছে টাইগাররা। সবশেষ চারদিন আগে টিটোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে হোয়াইট ওয়াশ এড়িয়েছিল বাংলার নারীরা। তিনদিন পর আবার ইতিহাস গড়ল জ্যোতিশারমিনরা। ভারতের বিপক্ষে আগে পাঁচটি ম্যাচ খেললেও সবগুলোতেই হেরেছে বাংলাদেশ। ষষ্ঠ ম্যাচে এসে দুর্দান্ত এক জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। নিজেদের ৫৫ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি ১৫ তম জয়। ফারজানানিগারদের ব্যাটিয়ের পর মারুফা এবং রাবেয়া খানের আগুন ঝরানো বোলিং বাংলাদেশকে পাইয়ে দেয় ৩০ রানের ঐতিহাসিক জয়। আর এই জয়ের ফলে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১০ তে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ দল। টিটোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচটি জিতে বাংলাদেশ যে জয়ের রথে চড়ে বসেছিল সেটি আরো এগিয়ে নিয়ে গেল গতকাল ওয়ানডে ম্যাচে জিতে। বাংলাদেশ দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল এই জয়। বৃষ্টিতে ৪৪ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে ডিএলএস মেথডে ভারতের সামনে ১৫৪ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায়। জবাব দিতে নেমে ৫০ বল আগে ১১৩ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারত। আর তাতেই বাংলাদেশের নারীরা গড়েছে ইতিহাস।

টস হেরে ব্যাট করতে শুরুটা ভাল করতে পারেনি বাংলাদেশ। ১৮ বল খেলে রানের খাতা খুলতে না পারা শারমিন আক্তার ফিরেন রান আউট হয়ে। পরের ওভারেই সাজঘরে ফিরেন মুর্শিদা। ৩০ বলে ১৩ রান করেন তিনি। এরপর বৃষ্টি শুরু হলে ১০৭ মিনিট খেলা বন্ধ থাকার পর ফের শুরু হয়। ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে আসে ৪৪ ওভারে। এর মধ্যে ফারজানা হকের সঙ্গে ভালো জুটি গড়েছিলেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। ৪৫ বলে ২৭ রান করে ফারজানা আউট হলে ভাঙ্গে ৪৯ রানের জুটি। অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতিও পারেননি বড় ইনিংস খেলতে। ৩ টি চারের সাহায্যে ৬৪ বলে ৩৯ রান করা জ্যোতিকে ফেরান আমানজত কাউর। তবে শেষ দিকের ব্যাটাররা কিছু কিছু অবদান রাখায় ১৫৩ রানে পৌছে বাংলাদেশ। শেষদিকে নেমে ২০ বলে ১৬ রান করেন সুলতানা খাতুন। এছাড়া ২৯ বলে ১২ রান করে অপরাজিত থাকেন ফাহিমা খাতুন। অসুস্থ থাকায় ব্যাটিংয়ে নামেননি স্বর্ণা আক্তার। ১৫৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা ভারতকে শুরু থেকেই চাপে রাখেন বাংলাদেশ দলের পেসার মারুফা আকতার। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে স্মৃতি মান্দানাকে ফেরান মারুফা। ১২ বলে ১১ রান করেন এই ওপেনার। দারুন এক ক্যাচ নেন জ্যোতি। আরেক ওপেনার প্রিয়া পুনিয়াকেও ফেরান মারুফা। ২৭ বলে ১০ রান করেন পুনিয়া। মারুফা শুরুতে যে চাপ সৃষ্টি করেছিল সেটি পরের বোলাররাও ধরে রাখতে সক্ষম হয়। ৭ রান পর ভারতীয় অধিনায়ককে ফেরান নাহিদা আক্তার। ভারতের চাপ আরও বাড়ে যখন রাবেয়া খানের দারুণ এক বলে ইয়াস্তিকা ভাটিয়া বোল্ড হয়ে ফিরেন। ২৪ বলে ১৫ রান করেন তিনি। ষষ্ট উইকেটে দীপ্তি শর্মা ও আমানজত কৌর মিলে ৩০ রানের জুটি গড়ে চেষ্টা করেছিলেন দলকে এগিয়ে নেওয়ার। কিন্তু তাদের সে প্রচেষ্টা সফল হতে দেননি মারুফা আকতার। ৪০ বলে ১৫ রান করা আমানজত উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। পরের বলে স্নেহা রানাকে বোল্ড করে ফেরান মারুফা। পরের ওভারের প্রথম বলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২০ রান করা দীপ্তি শর্মাকে ফেরান রাবেয়া খান। এরপর ভারতকে অলআউট করতে খুব বেশি সময় নেয়নি বাংলাদেশ। বারেদি আনুশা শেষ ব্যাটার হিসেবে রান আউট হলে ঐতিহাসিক জয় তুলে নিয়ে উল্লাসে মাতে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভোট চোরের আস্তানা ভেঙে দিতেই বিদেশিরা বাংলাদেশে আসছে : খসরু
পরবর্তী নিবন্ধআফগানদের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়