করোনাভাইরাস আক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রোগের লক্ষণ আপাতত বড় আকারে প্রকাশ না পেলেও তার যে বয়স এবং শরীরের যে ওজন তাতে রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করার আশঙ্কা আছে। বিভিন্ন গবেষণা এবং বিশ্লেষণ থেকে বেশি বয়সী এবং অতিরিক্ত ওজনের মানুষদের করোনাভাইরাসে জটিল স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ট্রাম্পের এই ঝুঁকি কতটা সে সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সিএনএন। এতে বলা হয়েছে, ট্রাম্প করোনাভাইরাসে জটিলতার উচ্চ–ঝুঁকিতে আছেন। এর কয়েকটি কারণের মধ্যে প্রথমেই বলা হয়েছে, ট্রাম্পের বয়স ৭৪ বছর। তার বডি ম্যাস ইনডেক্স (বিএমআই) ৩০ এর ওপরে, যাকে বলা যায় ওজনাধিক্য বা স্থুলতা। যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন’ (সিডিসি) এর তথ্যানুযায়ী, ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের তুলনায় ৬৫ থেকে ৭৪ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো জটিলতা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি পাঁচ গুণ বেশি। এগুলো ছাড়াও আরেকটি ঝুঁকি হচ্ছে, ট্রাম্প একজন পুরুষ। সিডিসি বলছে, নারীদের চেয়ে পুরুষদেরই করোনাভাইরাসে মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়া কিংবা মারা যাওয়ার আশঙ্কা বেশি। মানুষের দেহে অন্য কোনও রোগ (যেমন: কিডনি সমস্যা, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার প্রভৃতি) থাকলে সেক্ষেত্রেও করোনাভাইরাস সংক্রমণ জটিল আকার ধারণ করতে পারে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞাদের। ট্রাম্পের এমন কোনও স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে কিনা তা জানা যায়নি। ট্রাম্পের সর্বশেষ নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষায় তার সামান্য রক্তচাপ ধরা পড়েছিল। আর ২০১৮ সালের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় পাওয়া গিয়েছিল কিছুটা হৃদরোগের আলামত। এছাড়ও উদ্বেগজনক আরেকটি বিষয় হচ্ছে, ট্রাম্পের কোলেস্টেরল এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রাধিক্য। ২০১৭ এবং ১৮ সালের পরীক্ষায় যে মাত্রায় এই কলেস্টেরল ধরা পড়েছিল তা আরও অনেকটাই বেড়ে গেছে। সেদিক থেকেও ট্রাম্প ঝুঁকিতে আছেন। তবে এও ঠিক যে, অনেক মানুষই করোনাভাইরাসে খুব বেশি অসুস্থ হন না। আর ট্রাম্পের এখনও রোগের লক্ষণ প্রকাশ না পাওয়ায় তার লক্ষণ দেখা দেবে কিনা, আর যদি দেখা দেয়ও সেটি কতটা মারাত্মক রূপ নিচ্ছে তা স্পষ্ট হতে কয়েকদিন লেগে যেতে পারে।
মহামারী নিয়ে জুয়াখেলার খেসারত : এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার স্ত্রী মেলানিয়ার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশের পর কড়া ভাষায় নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন।
চীনের রাষ্ট্রায়াত্ত পত্রিকা গ্লোবাল টাইসমের প্রধান সম্পাদক হু জাইজিন টুইটারে লেখেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কোভিড–১৯ মহামারী নিয়ে জুয়া খেলেছেন এবং এখন তাকে এবং ফার্স্ট লেডিকে এর খেসারত দিতে হচ্ছে। তাদের আক্রান্ত হওয়ার এ খবর যুক্তরাষ্ট্রে মহামারী পরিস্থিতির ভয়াবহতাকে তুলে ধরেছে। এটি ট্রাম্প এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইমেজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এমনকি এটি এখন হয়ত ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। খবর বিডিনিউজের।