ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবীদের স্মৃতি সংরক্ষণের আহ্বান

জে এম সেনের বাড়ি ভাঙচুরের প্রতিবাদে নাগরিক সমাবেশ

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৯ জানুয়ারি, ২০২১ at ৬:৫৪ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গবন্ধু ও বাঘা যতীনের ভাস্কর্য এবং দেশপ্রিয় যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্তের বাড়ি ভাঙচুর একইসূত্রে গাথা বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রামের বিশিষ্ট নাগরিক সমাজ। ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতি মুছে ফেলার চক্রান্ত চলছে। গতকাল শুক্রবার নগরীর চেরাগি পাহাড় মোড়ে দেশপ্রিয় যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্তের বাড়ি ভাঙচুরের প্রতিবাদে ‘চট্টগ্রামের সর্বস্তরের সচেতন নাগরিকবৃন্দ’ নাগরিক সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেছেন। তারা প্রশ্ন রাখেন, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া দল সরকারে থাকা অবস্থায় কেন এমন হচ্ছে বারবার? এত দুঃসাহস কাদের? ভূমিদস্যুরা প্রশাসনের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এই ভাংচুর চালিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ ও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের এসব স্মৃতিচিহ্ন ঐতিহ্য এবং বধ্যভূমি রক্ষা করতে হবে, দেশকে বাঁচাতে হবে। সম্মিলিতভাবে এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রাজপথে নামতে হবে। সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে দেশপ্রিয়র বাড়ির সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেছেন রাজনীতিক, সংস্কৃতি কর্মী, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রতিনিধিরা।
সমাবেশে সিপিবির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. শাহআলম, মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ডা. মাহফুজুর রহমান, নারীনেত্রী নুর জাহান খান, গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা কাজী নুরুল আবছার, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরী কমিটির সভাপতি ডা. এ কিউ এম সিরাজুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, খেলাঘর প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার প্রমুখ বক্তব্য দেন।
নাগরিক সমাবেশের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন সামপ্রদায়িকতা বিরোধী তরুণ উদ্যোগের যুগ্ম আহ্বায়ক প্রীতম দাশ। দাবিগুলো হচ্ছে – যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্তের বাড়ি ভাঙচুরকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিত করা এবং ভাঙচুরের বিচার বিভাগীয় তদন্ত, ঐতিহাসিক বাড়িটিসহ দেশপ্রিয়র সম্পত্তি সরকারিভাবে অধিগ্রহণ এবং সেখানে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জাদুঘর স্থাপন করা ও সেখানে অতীতের সকল ইজারা বাতিল করা। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক স্থান ও স্থাপনা সংরক্ষণ করা, মাস্টারদা সূর্যসেনসহ ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের যোদ্ধাদের স্মৃতি সংরক্ষণ করতে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও সড়কের নামকরণ এবং পাঠ্যপুস্তকে বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের সঠিক ইতিহাস যুক্ত করা। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জন্ম ও মৃত্যু দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা।
চট্টাগ্রাম প্রেস ক্লাবের গ্রন্থাগার সম্পাদক মিন্টু চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, সিপিবির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অশোক সাহা, বাকবিশিস কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি উত্তম চৌধুরী, জামালখান ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, উদীচী সংগঠক শীলা দাশগুপ্তা, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশেদ হাসান, মিটুল দাশগুপ্ত, সিপিবি চট্টগ্রামের নারী সেলের আহ্বায়ক রেখা চৌধুরী, চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান সাংবাদিক আলীউর রহমান, চবি শিক্ষক ওমর ফারুক রাসেল, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার, মাসুদুল হক, সিঞ্চন ভৌমিক, বোধনের প্রণব চৌধুরী, কবি ও সাংবাদিক আহমেদ মুনীর, ছাত্র ইউনিয়নের জেলা সাধারণ সম্পাদক ইমরান চৌধুরী। কর্মসূচিতে সংহতি জানায় মহিলা পরিষদ, খেলাঘর, ছাত্র ইউনিয়ন, বোধন, ফেইমসহ বিভিন্ন সংগঠন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রণোদনার ঋণ পরিশোধে ছাড় চায় বিজিএমইএ
পরবর্তী নিবন্ধমসজিদে দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু জাবেদের