ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও গোলাগুলির মধ্যে গুলিতে এক ছাত্রদল নেতা নিহত হয়েছেন। বাঞ্ছারামপুর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ আজিজ শাওন জানান, উপজেলার মোল্লাবাড়ি এলাকায় শনিবার বিকালে তিনি গুলিবিদ্ধ হন; সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। নিহত মো. নয়ন (২২) বাঞ্ছারামপুরের সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি এবং ওই ইউনিয়নের চরশিবপুর গ্রামের রহমত উল্লাহর ছেলে। তিনি বাঞ্ছারামপুর ডিগ্রি কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ছিলেন। খবর বিডিনিউজের।
পুলিশের গুলিতে নয়নের মৃত্যু হয়েছে বলে ছাত্রদল দাবি করলেও পুলিশ তা নিশ্চিত করেনি। এছাড়া সংঘর্ষে ছয় জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলেও দাবি করছে পুলিশ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) সিরাজুল ইসলাম বলেন, মিছিলকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং পুলিশের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি চালায়। তবে নয়ন কীভাবে গুলিবিদ্ধ হয়েছে সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ আজিজ শাওন জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নয়নকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেছেন। পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব আতাউর রহমান জানান, আগামী ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় অনুষ্ঠিতব্য বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশ উপলক্ষে শনিবার বিকালে মোল্লাবাড়ি এলাকায় বিএনপি নেতা সাইদুজ্জামান কামালের বাড়িতে প্রস্তুতি সভা করে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠন। পরে সভা শেষে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে রাস্তায় সমাবেশের লিফলেট বিতরণ করার সময় পুলিশ বাধা দেয়।
এ নিয়ে উভয় পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি চালায়। এতে ছাত্রদল নেতা নয়ন পেটে গুলিবিদ্ধ হন। আতাউর বলেন, তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আতাউর রহমানের দাবি, এ ঘটনায় তাদের আরও অন্তত ১০ জন নেতা-কর্মী আহত হন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম ঠিকানা জানা যায়নি।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের জানান, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় তাদের প্রোগ্রাম রয়েছে। তারই লিফলেট বিলি করছিলেন তাদের কর্মীরা। বিকাল আনুমানিক ৪টার দিকে মোল্লাবাড়ি সিএনজি স্টেশনের সামনে লিফলেট বিলির সময় পুলিশ সদস্যরা শটগান দিয়ে গুলি করলে নয়ন মিয়া গুলিবিদ্ধ হন।