আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যে তা-ব চালানো হয়েছে, সেটি একটি সংগঠনের ব্যানারে হলেও সেটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল বিএনপি এবং জামায়াত। তারা মিলে এ ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তা-ব ইসলামের ওপর কালিমা লেপন করেছে। তিনি বলেন, তারা স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বানানোর জন্য। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমন অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়েছিল মাত্র। ইসলাম কখনো এগুলো সমর্থন করে না, এ অপশক্তিকে রুখতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে মুজিব কর্নার ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রিসার্চ সেন্টার ফর ইসলাম অ্যান্ড ইন্টাররিলিজিয়াস ডায়ালগের (বিআরসিআইআইডি) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান, সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল আজিম আরিফ, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য রিজিয়া রেজা চৗধুরী, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আহসান উল্লাহ, প্রফেসর ড. ছালেহ জহুর, শাহরিয়ার জাহান প্রমুখ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যেভাবে নৈরাজ্য চালানো হয়েছে মানুষের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, মানুষের সম্পদ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, ব্যক্তিগত গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, অনেকে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনেছে, সেই গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, ইসলামে তো কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি জ্বালিয়ে দেওয়ার কথা বলেনি। ইসলাম তো এটি কখনো সমর্থন করে না। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আগমনের সঙ্গে ঋণ করে যে ব্যক্তি গাড়ি কিনেছে সেটির কী সম্পর্ক প্রশ্ন রেখে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, আজকে ইসলামের কথা বলে যে অপকর্মগুলো করা হচ্ছে, আমাদের কৃষ্টি-সংস্কৃতির ওপর আঘাত হানা হচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সুর সম্রাট আলাউদ্দিনের একাডেমি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভূমি অফিস জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, ফায়ার সার্ভিসের স্টেশনে হামলা করা হয়েছে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেনি, কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পদও নয় এটি। ইসলামিক শিক্ষায় জাতিকে যারা আন্তর্জাতিক পরিম-লে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন, ধর্মীয় শিক্ষা, প্রযুক্তি শিক্ষা ও বিজ্ঞান শিক্ষাসহ সব ধর্মের মানুষকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে চেয়েছিলেন তাদের প্রচেষ্টায় এ বিশ্ববিদ্যালয় আজকে এখানে এসেছে। যে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন মহামান্য আদালত বাতিল করেছেন, তাদের কিছু ব্যক্তি অপপ্রচার করে এটাকে নিজের পৈতৃক সম্পত্তির মতো ব্যবহারের জন্য দখল করে রেখেছেন। এটা কখনো কাম্য হতে পারে না।
তিনি বলেন, যে আইনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয় সেই আইনের সুনির্দিষ্ট বিধান আছে যারা দেশে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ ও অরাজকতা সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত থাকবে তারা কোনোভাবেই কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃষ্ঠপোষকতার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারবে না। এ আইনি বিধান থাকায় রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের ওপর দায়িত্ব বর্তায় এ সব কার্যকলাপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রত্যাহার পূর্বক যারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন তাদের অধিষ্ঠিত এবং প্রতিষ্ঠা করা সরকারের আইনি দায়িত্ব। তদন্তপূর্বক সেই আইনি দায়িত্ব এখানে সম্পাদন করা হয়েছে। শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, কাগজপত্র দালিলিক অনুসন্ধান করে দেখেছি চট্টগ্রাম এবং দেশ-বিদেশের অনেক অনুরাগী দানশীল ব্যক্তি এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সব সময় অনুদান দিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আজকের এ পর্যায়ে এনেছেন। তাদের উত্তরসূরিরা আজকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন, এটি আমাদের জন্য গৌরবের বিষয়।