ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের সাজা, এক কোটি ৪ লাখ টাকা জরিমানা

জাল এফডিআর রশিদ সরবরাহ করে গ্রাহকের ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৫:৫২ পূর্বাহ্ণ

গ্রাহকের ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের দায়ে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল), ওআর নিজাম রোড শাখার প্রায়োরিটি ম্যানেজার মো. ইফতেখারুল কবিরকে ২৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাকে এক কোটি ৪ লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মামলার অপর আসামি চট্টগ্রামের নিশাত এন্টারপ্রাইজের মালিক মাহমুদুল হাসানকে ১৩ বছরেরর সশ্রম কারাদণ্ড, ৭৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো এক বছর ৪ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আব্দুল মজিদ এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় দুই আসামি কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

দুদক পিপি মাহমুদুল হক আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দুই আসামিকে যথাক্রমে ২৬ বছর ও ১৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। পুরো বিচার প্রক্রিয়ায় বিচারক ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়েছেন। তিনি বলেন, দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ৪৭৭(), ১০৯ ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫() ধারায় দুই আসামিকে এ কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালতসূত্র জানায়, কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইফতেখারুল কবির ২০১৪ সালের ৩ জুলাই ইস্টার্ন ব্যাংক এ যোগদান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারী ও আর নিজাম রোড শাখায় কাজ শুরু করেন। তখন থেকে তিনি বিভিন্ন গ্রাহকের সাথে অসৎ উদ্দেশ্য পূরণের জন্য সুসম্পর্ক সৃষ্টি করেন।

এভাবে অনন্যা বড়ুয়া, রূপম কিশোর বড়ুয়া ও সুপ্রভা বড়ুয়া’র যৌথ একাউন্টধারীর সাথেও সম্পর্ক গড়ে তুলেন তিনি। একপর্যায়ে যৌথ একাউন্টধারীরা ও আর নিজাম রোড শাখায় হাজির হয়ে তাদের একাউন্টে বিভিন্ন সময় জমাকৃত ৫০ লাখ টাকার এফডিআর খোলার জন্য ইফতেখারুল কবিরকে বলেন। কিন্তু ইফতেখারুল কবির তা না করে যৌথ একাউন্টধারীদের কাছে নিজের সৃজনকৃত জাল প্যাড জাল সিল ও জাল স্বাক্ষর করা জাল এফডিআর রশিদ সরবরাহ করেন। পাশাপাশি কৌশলে তাদের কাছ থেকে ফান্ড ট্রান্সফার ফরম স্বাক্ষর করে নেয়া হয়। আসামি ইফতেখারুল কবির’র বক্তব্য অনুযায়ী নগরীর আন্দরকিল্লার জাফরি প্রিন্টার্স’র স্বত্তাধিকারী উক্ত জাল এফডিআর রশিদ ও প্যাড ছাপিয়ে জালজালিয়াতির ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছেন। আদালতসূত্র আরো জানায়, পরবর্তীতে আসামি ইফতেখারুল কবির নিশাত এন্টারপ্রাইইজের স্বত্তাধিকারী মাহমুদুল হাসানের একাউন্টে উক্ত ৫০ লাখ টাকার ফান্ড হস্থান্তর করেন।

তারা দুজন পরস্পর যোগসাজসে গ্রাহকের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা জালজালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। আদালসূত্র জানায়, গ্রাহকের ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ২০১৯ সালের ২ অক্টোবর ইফতেখারুল কবির ও মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন দুদক, চট্টগ্রাম১ এর তৎকালিন উপসহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম। মামলাটি তদন্তও করেন তিনি। তদন্ত শেষ করে তিনি গত ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর দুই আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাকিল করেন। পরবর্তীতে গত বছরের ২১ জানুয়ারি তদন্ত কর্মকর্তার দাখিলকৃত চার্জশিট গ্রহণ করে দুই আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রকল্প পরিচালককে মারধরের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪
পরবর্তী নিবন্ধপছন্দের প্রার্থীকে শিক্ষক না করায় চবি ভিসির অফিসে ছাত্রলীগের ভাঙচুর