নগরীর পাঁচলাইশ এলাকার মেসার্স ডায়াহান এক্সিমের বিরুদ্ধে দাবিনামা ও অর্থদণ্ডসহ প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার আদেশ দেয় চট্টগ্রাম কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট। পরে আদেশের বিরুদ্ধে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইবুন্যালে আপিল করে। ট্রাইব্যুনাল সকল নথিপত্র যাচাই বাছাই করে পুনঃআদেশ দেয়ার জন্য চট্টগ্রাম কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনারের কাছে পাঠিয়েছে। গত ২১ মে আপিলাত ট্রাইব্যুানালের সদস্য (প্রেসিডেন্ট) ড. মো. মতিউর রহমান এবং সদস্য (বিচার) লুবনা জাহান স্বাক্ষরিত এক আদেশে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
জানা গেছে, আপিলাত ট্রাইব্যুনাল পাঁচলাইশ এলাকার মেসার্স ডায়াহান এক্সিমের নথি পর্যালোচনায় দেখতে পান, প্রতিষ্ঠানটি গত ২০১৩ সালের অক্টোরব থেকে ২০১৭ সালের মার্চ পর্যন্ত মোট ৪৭৫টি বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে ৩২ কোটি ৩৬ লাখ ৮৮ হাজার ৫৬৩ টাকা টাকার পণ্য আমদানি করে। বিপরীতে মূল্য ঘোষণা অনুযায়ী ৩৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপযোগ্য মূল্য ৪৩ কোটি ২৯ লাখ ৯৮ হাজার ১৯০ টাকার ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট বাবদ ৬ কোটি ৪৯ লাখ ৪৯ হাজার ৭২৮ টাকা আদায়ে চূড়ান্ত দাবিনামা জারি করে চট্টগ্রাম কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট। এছাড়া একসাথে ৪ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। তবে আপিলকারী প্রতিষ্ঠান ডায়াহান এক্সিমের দাবি, আমদানিকৃত পণ্য খালাসের সময় প্রত্যেক বিল অব এন্ট্রির বিপরীতে ভ্যাট ও এডভান্স ট্রেড ভ্যাট প্রদান করা হয়েছে। আমদানি পর্যায়ের ভ্যাটের পরিমাণকে ব্যবসায়ী পর্যায়ের প্রকৃত মূল্য ভ্যাটের পরিমাণ হিসেবে যথাযথ হয়নি মর্মে আপিলকারী উল্লেখ করেন। এছাড়া আমদানিকৃত পণ্য যথাযথ সরবরাহ করা হয়েছে এবং আমদানিকৃত পণ্যের বিপরীতে পণ্য খালাস নেয়ার সময় প্রত্যেক বিল অব এন্টির বিপরীতে ভ্যাট, অ্যাডভান্স ট্রেড ভ্যাট ও সরকারি রাজস্ব প্রদান করা হয়েছে বলে আপিলকারী উল্লেখ করেন। এছাড়া আমদানি পর্যায়ে যে ভ্যাট দেখানো হয়েছে, তারচেয়ে কম মূল্যে আমদানিকৃত পণ্য বিক্রয় করা হয়েছে এবং মূল্য ঘোষণাকালে ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ ভ্যাট না দেখিয়ে ভুলবশতঃ ৩৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ ভ্যাট দেখানো হয়েছে। তাই আইন অনুযায়ী আপিলকারী প্রতিষ্ঠান আইনানুগ কোনো সুবিধা পাওয়ার অধিকারী হলে, সে মোতাবেক পুনরায় যাচাই বাছাই করে আগের আদেশেটি বাতিলপূর্বক পুনঃআদেশ প্রদানের লক্ষ্যে রিমান্ড প্রেরণ করা যৌক্তিক বলে আপিলাত ট্রাইব্যুনাল আদেশে জানান। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পেপার ইম্পোর্টার্স এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং মেসার্স ডায়াহান এক্সিমের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ বেলাল বলেন, আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে আমি আর্থিক ক্ষতি, মানসিক ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছি।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর মেসার্স ডায়াহান এক্সিমের বিরুদ্ধে ৬ কোটি ৪৯ লাখ ৪৯ হাজার ৭২৮ টাকা দাবিনামা এবং ৪ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেয়। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির বিল লক করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইবুন্যালে আপিল করে।