স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ২০ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে ৬ হাজার ৩৬৪ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত এক দিনে মৃত্যু হয়েছে আরও ১৬৬ জনের। নমুনা পরীক্ষা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে শনাক্তের সংখ্যাও। বিডিনিউজ
নতুন আক্রান্তদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৪৬ হাজার ৫৬৪ জনে। আর আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত মোট ১৮ হাজার ৮৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
কোরবানির ঈদের ছুটিতে নমুনা পরীক্ষা এক চতুর্থাংশে নেমে আসায় এর আগের দিন শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা এক ধাক্কায় নেমে এসেছিল এক মাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে।
প্রায় সাড়ে ১১ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ৩ হাজার ৬৯৭ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার কথা জানিয়েছিল বৃহস্পতিবার, মৃত্যু হয়েছিল ১৮৭ জনের।
আজ শুক্রবার (২৩ জুলাই) নমুনা পরীক্ষা কিছুটা বাড়লেও এখনও তা আগের তুলনায় অনেক কম। ঈদের ছুটির আগে শেষ কর্মদিবসে নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৩৯ হাজার ৫১০টি, সেদিন ১১ হাজার ৫৭৯ জন নতুন রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গত এক দিনে কেবল ঢাকা বিভাগেই ৩ হাজার ৬৮৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, চট্টগ্রাম বিভাগে শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ১৮৯ জন। এই দুই বিভাগেই শনাক্ত হয়েছে সারা দেশে মোট শনাক্ত রোগীর প্রায় ৭৭ শতাংশ।
আর যে ১৬৬ জন গত এক দিনে মারা গেছেন, তাদের ৬০ জনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। খুলনা এবং চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৩ জন করে মৃত্যু হয়েছে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; তা ১১ লাখ পেরিয়ে যায় এ বছর ১৮ জুলাই। তার আগে ১২ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৩ হাজার ৭৬৮ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পরে।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত ১৯ জুলাই তা ১৮ হাজার ছাড়ায়। সেদিনই এক দিনে রেকর্ড ২৩১ জনের মৃত্যুর খবর জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিশ্বে শনাক্ত রোগী ইতোমধ্যে ১৯ কোটি ২৬ লাখ ছাড়িয়ে গেছে, করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ৪১ লাখ ৩৮ হাজারের বেশি মানুষের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৩৯টি ল্যাবে ২০ হাজার ৪৯৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৭৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮৬৭টি নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩১ দশমিক শূন্য ৫, যা আগের দিন ৩২ দশমিক ১৯ শতাংশ ছিল।
দেশে এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
গত এক দিনে ঢাকা বিভাগের মধ্যে ঢাকা জেলায় ২ হাজার ৮২৭ জন, ফরিদপুরে ১৬৪ জন, গাজীপুরে ৪৮ জন, মুন্সিগঞ্জে ১৯ জন, নারায়ণগঞ্জে ৯০, নরসিংদীতে ১৪২ জন এবং কিশোরগঞ্জে ১০৭ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ৪৫১ জন, কক্সবাজারে ৬৯, নোয়াখালীতে ১১৬ জন, চাঁদপুরে ১০৮ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৮৩ জন এবং কুমিল্লায় ২৫১ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
খুলনা বিভাগের যশোরে ২১ জন, খুলনা জেলায় ১৩৯ জন, ঝিনাইদহে ৭৩ জন এবং কুষ্টিয়ায় ৫৭ জনের মধ্যে ধরা পড়েছে সংক্রমণ।
এছাড়া অন্য বিভাগগুলোর মধ্যে সিরাজগঞ্জ জেলায় ৭৬ জন এবং সিলেট জেলায় ২০০ জন, মৌলভীবাজারে ১০৬ জন এবং বরিশালে ১০৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে গত এক দিনে।
ঢাকা বিভাগে গত এক দিনে যে ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ২৭ জন ছিলেন ঢাকা জেলার। খুলনা বিভাগে মারা যাওয়া ৩৩ জনের মধ্যে কুষ্টিয়ার ১৩ জন এবং চট্টগ্রাম বিভাগে মারা যাওয়া ৩৩ জনের মধ্যে ৯ জন কুমিল্লা জেলার বাসিন্দা ছিলেন।
এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ৭ জন, রংপুর বিভাগে ১২ জন, সিলেট বিভাগে ৮ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩ জন এবং বরিশাল বিভাগে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়।
মৃত ১৬৬ জনের মধ্যে ৪৬ জনের বয়স ছিল ৬১ থেকে ৭০ বছরের কোঠায়; ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী ৩২ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছর বয়সী ২৭ জন এবং ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ২৪ জন মারা গেছেন।
তাদের ৯৫ জন ছিলেন পুরুষ, ৭১ জন ছিলেন নারী। ১২৩ জন সরকারি হাসপাতালে, ৩৯ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ৪ জন বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।